কুমিল্লা: কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় চারটি মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে হোমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ লোকজন ওই দিন থানার সামনে জড়ো হয়ে অভিযুক্ত যুবকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ওই যুবককে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ইসলামী যুব সেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এরই মধ্যে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা আছাদপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে অগ্নিসংযোগ এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে আছাদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য। পুড়ে যাওয়া মাজারের সামনে অভিযুক্ত যুবকের মায়ের সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকদের। তিনি বলেন, ‘ছেলেকে তো পুলিশের হাতে তুলে দিলাম। এরপরও আমাদের মাজার ও ঘরে আগুন দেওয়া হলো কেন? পুলিশ কোনো নিরাপত্তা দিতে পারল না। এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হয়েছি, কিছুই রক্ষা করতে পারিনি।’
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু যারা আইন হাতে তুলে নিয়ে মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’