পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে সৌদি আরব পাকিস্তানকে প্রতিরক্ষা দেবে, এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে সদ্য সই হওয়া ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির’ মূল বিষয়।’
জিও টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ‘হ্যাঁ, একেবারেই। এতে কোনো সন্দেহ নেই…’। তিনি এই চুক্তিকে ন্যাটো জোটের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে তুলনা করেন। যেখানে বলা হয়েছে— একটি জোট সদস্যের ওপর সামরিক হামলা মানে সবার ওপর হামলা।
তবে পাকিস্তানি মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে এই চুক্তিটি আক্রমণাত্মক নয়, বরং একটি ‘প্রতিরক্ষামূলক’ ব্যবস্থা। যদি আগ্রাসন হয়, তা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হোক বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, আমরা যৌথভাবে এর মোকাবিলা করব।’
রয়টার্সকে আলাদাভাবে আসিফ বলেন, ‘এই চুক্তি কোনো আগ্রাসনের জন্য ব্যবহার করার আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু যদি পক্ষগুলো হুমকির মুখে পড়ে, তবে স্পষ্টতই এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র সৌদি আরবের ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ থাকবে, যদিও পাকিস্তানের ঘোষিত নীতি অনুসারে পারমাণবিক অস্ত্র শুধুমাত্র ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির অধীনে আমাদের সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধ থাকবে।’ তবে তিনি এও উল্লেখ করেন, পাকিস্তান সবসময় তার পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনের অনুমতি দিয়েছে এবং কখনোই কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেনি।
এই চুক্তির ফলে পাকিস্তান এখন পারমাণবিক সুরক্ষা দিতে বাধ্য কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি একটি ব্যাপক প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি যা সকল সামরিক উপায়কে অন্তর্ভুক্ত করে।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের এই সপ্তাহে রিয়াদ সফরের সময় ‘পারস্পরিক প্রতিরক্ষা’ চুক্তিটি সই হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তান-সৌদি চুক্তিটি ‘দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের একটি বোঝাপড়াকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এর প্রভাব বিবেচনা করা হচ্ছে।
সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই চুক্তি কার্যকরভাবে রিয়াদের অর্থকে ইসলামাবাদের পারমাণবিক অস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এটি উভয় পক্ষের জন্য একটি বড় জয়।‘
বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এর ফলে ইসরায়েল ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে, ইরানও তাই করবে।‘