নীলফামারী: উত্তরের জেলা নীলফামারীতে ধীরে ধীরে জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোরবেলা মাঠের ধানগাছ আর ঘাসের পাতায় জমছে শিশিরকণা, সূর্যের আলো পড়তেই ঝিলমিল করে উঠছে প্রকৃতি। দিনের বেলায় এখনও খানিকটা গরম থাকলেও, রাত গভীর হলেই হালকা ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করছে।
গ্রামাঞ্চলের চিত্রে শীতের ছোঁয়া এখন স্পষ্ট। ভোরে কৃষকরা মাঠে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে যতে শুরু করেছেন। শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে একটু ভাড়ি কাপড় পড়ে। খেটে খাওয়া মানুষদের হাতে দেখা যাচ্ছে পাতলা কম্বল কিংবা চাদর। বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাকসবজি লাউ, মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি।
শীতের আগনের সঙ্গে সঙ্গে পালটাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রাও। সন্ধ্যার পর চায়ের দোকানে ভিড় বাড়ছে, ভাপা পিঠার মৌসুমী দোকান দেখা যাচ্ছে গ্রামের বাজারগুলোতে। হাট-বাজারে বেড়েছে উলের পোশাকের চাহিদা। অন্যদিকে, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষদের দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে কীভাবে তারা শীত মোকাবিলা করবেন। শীতে স্বস্তি যেমন আছে, তেমনি আছে দুর্ভোগও।
স্থানীয় প্রবীণরা ব্যক্তিরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলে শীত সবসময় একটু আগেই নামে। বিশেষ করে তিস্তা নদী ও এর আশপাশের চরাঞ্চলে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হয়। শীতের শেষ সময় এ জেলায় তাপমাত্রা অনেক সময় ৮ থেকে ১০ ডিগ্রিতে নেমে যায়। ফলে শীতবস্ত্রের অভাবে সাধারণ মানুষ পড়েন বিপাকে ।
ডোমার উপজেলার মিরজাগঞ্জ এলাকার জেলে আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘শীতকাল আসলে আমাদের কাজের চাহিদা বাড়ে কিন্তু শীতের দিনে সকাল বেলা পুকুরে নামতে ভীষণ কষ্ট হয়।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের দিনের মোটামুটি ভালোই সময় কাটে বা ভালোই লাগে, কিন্তু দিনমজুর বা খেটে মানুষদের জন্য একটু কষ্টকর সময় কাটে।’
নীলফামারী শান্তি নগর মোড়ে প্রায় রিকশা নিয়ে বসে থাকে হাসিবুল ইসলাম তিনি বলেন, ‘যদিও আমাদের শহরে এখনো শীত অনুভব হচ্ছে না কিন্তু শীতের সময় আমাদের গাড়ি চালাতে বা জীবনযাপন এ ভীষণ কষ্ট হয়।’
এখনই শুরু হয়েছে শীতের আগমনী বার্তা, এখন অপেক্ষা শুধু পুরোপুরি শীতের প্রকোপ নেমে আসার। অনেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ব্যবহার করতে শুরু করেছেন বাড়তি কম্বল, শীতবস্ত্র মেরামত করছেন অনেকেই ।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, রোববার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনে এখনো গরম অনুভূত হলেও শেষ রাতে হালকা শীত পড়ছে। তবে ঘন কুয়াশার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত শীত নামতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।