ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি, বরং ভারতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন—এমন দাবি করেছেন তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জেরার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৪৭তম সাক্ষী ছিলেন নাহিদ।
জবানবন্দিতে দেওয়া নাহিদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আমির হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্টের আন্দোলন ছিল দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ। এর পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামও প্রস্তাবিত হয়েছিল।
স্টেট ডিফেন্সের এ বক্তব্যে প্রসিকিউশন আপত্তি জানায়। তাদের মতে, মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন বিষয় আলোচনার সুযোগ নেই। এ সময় আমির হোসেন বলেন, “ড. ইউনূসকে জড়িয়ে কথা বলা সমীচীন নয়, তবে সাক্ষীর বক্তব্যের খাতিরে উল্লেখ করছি।”
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে নির্দোষ দাবি করে তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার বা মারণাস্ত্র ব্যবহারের কোনো নির্দেশ দেননি শেখ হাসিনা। বরং জনগণের জানমাল ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়নি।”
তবে এসব বক্তব্যকে ‘অসত্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন সাক্ষী নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, ৫ আগস্ট সারা দেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের তথ্য তিনি সমন্বয়ক হাসনাত-সারজিসের কাছ থেকে জেনেছেন।
এদিন সকাল ১১টার পর দ্বিতীয় দিনের মতো নাহিদের জেরা শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। এরপর তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বরও তিনি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন এবং বিকেল পর্যন্ত জেরা চলেছিল।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন মিজানুল ইসলাম। এ সময় প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।