ঢাকা: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্র যে কনস্টিটিউশন চলবে, তার বাস্তব রূপ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছেন। থিওরি অব প্র্যাকটিস কেবল মুখে বলেননি, বাস্তবে তা আমল করে দেখিয়েছেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মুক্তমঞ্চে ঈদ-ই মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ এবং মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেড় হাজার বছর আগে নারী ও শিশুর অধিকারের কথা বলেছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনিই মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বর্ণবৈষম্য ও জাতবৈষম্যের কবর দিয়েছেন। আল-কোরআনের আলোকে প্রণীত পৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান, নারীর অধিকার ও সম্মান, বর্ণ ও জাতিগত বৈষম্য নিরসন, উত্তরাধিকার আইন, নারী শিক্ষা—এসব ক্ষেত্রে নবীজীর দিকনির্দেশনায় আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল। তাই আমাদের প্রত্যেককে সিরাত ও সুন্নাতকে জীবনে কার্যকর করার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। নবীজীর জীবনাদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সত্যিকার পরিবর্তন আসবে।’
সীরাত পাঠ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সীরাতে রাসুল (সা.) এক কালজয়ী আদর্শ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শের আলোকে সমগ্র পৃথিবী আলোকিত হয়েছিল, জাহিলিয়াতের অন্ধকার দূর হয়েছিল। কিন্তু আজকের যুগে আমরা বাইরের আচরণ ও বাহ্যিক জ্ঞানার্জনে যতটা মনোযোগী, অন্তরের জীবনধারায় সীরাত ও সুন্নাতের প্রভাব ততটা প্রতিফলিত হচ্ছে না। রাসুল (সা.)-এর জীবন বিধান আধুনিক যুগেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের আয়োজন কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি এক মহৎ শিক্ষামূলক উদ্যোগ। এটি স্মরণ করিয়ে দেয়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমনে পৃথিবী কিভাবে আলোকিত হয়েছিল। তাঁর জীবনাদর্শ ও চরিত্র থেকে আমরা কতটা শিক্ষা নিয়েছি এবং কতটা তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান এবং জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেন।
আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, এবারই প্রথম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে বৃহৎ আয়োজনে ঈদ-ই মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছে। এর আগে গত সপ্তাহে জবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির আয়োজনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।