ঢাকা: আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সারাদেশে অন্তত ৭০০টি পূজামণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রতিটি মণ্ডপে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনের নেতারা।
সংগঠনের সদস্য প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য এসেছে, এরই মধ্যেই পাঁচ জেলায় প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ রয়েছে সাতক্ষীরায়, যেখানে ৫৫টি মণ্ডপকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী অঞ্চলের মণ্ডপগুলোকেও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারকে জানিয়েছি।’
তিনি আরও জানান, প্রতিটি পূজামণ্ডপে সরকারি খরচে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে।
প্রদীপ কান্তি দে বলেন, ‘যেহেতু বর্তমানে আর্মি সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় কাজ করছে, তাই আমরা পূজায় আর্মি মোতায়েনের দাবি জানাই। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবেন।’
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের পক্ষে প্রসেনজিৎ কুমার হালদার। তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আট দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
- সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি।
- অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন।
- সংখ্যালঘুবিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন।
- হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টকে যথাক্রমে ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ।
- দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার আইন প্রণয়ন এবং ভেস্টেড প্রপার্টি রিটার্ন অ্যাক্ট যথাযথ বাস্তবায়ন।
- বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনাকক্ষের ব্যবস্থা।
- সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডকে আধুনিকায়ন।
- দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বড় উৎসবে যথাযথ সরকারি ছুটি প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সরকারের কাছে তাদের আহ্বান, আসন্ন দুর্গাপূজায় যেন কোনো প্রকার অঘটন না ঘটে এবং উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।