ঢাকা: শহিদি মর্যাদা-কবর সংরক্ষণসহ ৮ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে নিহত পরিবারগুলোর সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘২১ জুলাই ২০০৫ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। এদিন দুপুর ১টা ১২ মিনিটে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়। যার ফলে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে অনেক কোমলমতি সন্তান, অভিভাবক, শিক্ষক ও স্টাফ নিহত এবং আহত হয়। যা পুরো জাতি তথা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষনিকভাবে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন এবং পরের দিন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। এ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আজ পর্যন্ত পাইলটসহ শহিদ হয়েছে ৩৭ জন।’
তারা আরও বলেন, ‘হতাহতদের স্মরণে এখনো কোনো দৃশ্যমান পরিস্থিতির উদ্ভব না হওয়ায় আমরা ৮ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করছি।’
বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের দাবি-
- ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের দ্রুত বিচার করতে হবে।
- আমরা যা হারিয়েছি তা অদৃশ্য। কোনো কিছুর বিনিময়ে সেই ক্ষতির দাম নির্ধারণ করা যাবে না। গত ২২ জুলাই উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে অনার্থে রিটকৃত ভিট নম্বর ১১৮৪২/২০২৫ এ উল্লেখিত নিহতদের জন্য ৫ (পাঁচ) কোটি এবং আহতদের জন্য ২ (দুই) কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- বিমান দুর্ঘটনায় আহত অনেককে দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে। তাছাড়া ডাক্তারদের ভাষ্য মতে, আগুনে পোড়ার কারণে আহতরা হঠাৎ বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হবে। এর চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। তাই আহতরা সিএমএইচ/সরকারি হাসপাতালে যেন আজীবন ফ্রি চিকিৎসা (ওষুধসহ) পেতে পারে হেলথ কার্ডের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে।
- দুর্ঘটনায় আহতদের অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে না। তাদেরকে সরকারি চাকুরি প্রদানসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের কথা স্মরণ করতে প্রতি বছর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ জুলাই দিনটিকে যেন শোক দিবস হিসেবে যেন পালন করা হয় সে জন্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের অনেককে সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তাদের কবরগুলো স্থায়ীকরণ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।
- দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট, শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী ও আয়াসহ সকলকে শহিদের মর্যাদা (সনদ এবং গেজেটসহ) ও সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
- বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে উত্তরায় একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।