ফরিদপুর: ফরিদপুরে স্ট্যান্ড দখল ও চাঁদা না পেয়ে মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমানের অনুসারিদের বিরুদ্ধে শহরের মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ১৬টি মাহেন্দ্র ভাঙচুর করা হয়। হামলায় ১০ জন মাহেন্দ্র শ্রমিক ও চালক আহত হন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের গোয়ালচামট পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- রাইফুল আলম, মামুন মন্ডল, সলেমান শেখ ও মোতালেব মল্লিক।
এলাকাবাসী ও মাহেন্দ্রচালক সূত্রে জানা গেছে, শহরের হাজরাতলার মোড় এলাকায় সালথাগামী মাহেন্দ্রর স্ট্যান্ড, অপরদিকে গোয়ালচামট ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে কানাইপুরগামী মাহেন্দ্রের স্ট্যান্ড অবস্থিত। সালথার গাড়ি কানাইপুর স্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় সেখানে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না। তবে আজ সড়কে যানজট থাকায় সালথার একটি মাহেন্দ্র কানাইপুর স্ট্যান্ড এলাকায় আটক পড়লে ওই মাহেন্দ্রর চালককে মারধোর করে কানাইপুর স্ট্যান্ডে আটকে রাখে। এখন খবর শোনা মাত্র শাহীন হাওলাদারসহ ২৫-৩০ জন বহিরাগত গোয়ালচামটস্থ ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে গিয়ে ওই স্ট্যান্ডে অবস্থানরত শ্রমিকদের নির্বিচারে পিটিয়ে আহত করে ও গাড়িগুলো ভাঙে।
তবে মাহেন্দ্রচালক লিয়াকত আলী বলেন, ‘শাহীন হাওলাদারসহ বেশকিছু যুবক কয়েক মাস ধরে ভাঙ্গা রাস্তারে মোড়ে অবস্থিত মাহেন্দ্রস্ট্যান্ডটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ সময় তারা স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত প্রতিটি মাহেন্দ্রর কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। গত কয়েকদিন ধরে মাহেন্দ্র চালকেরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল যুবদল নেতার অনুসারী শাহীন হাওলাদার ও তার লোকজন। শ্রমিকরা চাঁদা দিতে রাজী হচ্ছিল না। এ জন্যই পরিকল্পিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’
মাহেন্দ্র শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমানের ক্যাডার শাহীন হাওলাদারের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
মাহেন্দ্র চালক রানা সরদার বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বেশ কিছু ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডে হামলা চালায়। এ সময় তারা নির্বিচারে মাহেন্দ্রগুলো ভাঙচুর করতে থাকে। এ সময় তাদের বাধা দিলে আমাদের ১০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।’
এ ব্যাপারে শাহীন হাওলাদারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিএনপি নেতা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমি শ্রমিক রাজনীতি করি না। মাহেন্দ্র শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। এ নিয়ে আমাকে জড়ানো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাজ।’
শাহীন তার ক্যাডার নন বলে দাবি করে তিনি জানান, আগামীতে পৌরসভার নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এজন্য তার দলের একটি অংশ তার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে।
তবে জেলা মাহেন্দ্র শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আমরা নাকি ফ্যাসিবাদের দোসর। এ কথা বলে আমাদের স্ট্যান্ড দখল করার চেষ্টা করছে যুবদল নেতা মাসুদুর রহমান ও তার অনুসারী শাহীন হাওলাদার গং। আজকের হামলা সে পরিকল্পনারই অংশ।‘
জেলা যুবদলের সভাপতি মো. রাজিব হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যদি এমন ঘটনা কেউ ঘটিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনা রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কেউ কেনো অভিযোগ করেনি।’