Wednesday 24 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসরায়েলের পারমাণবিক কেন্দ্রের গোপন তথ্য হাতে পেয়েছে ইরান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:২৬

গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ইসরায়েলের পারমাণবিক কেন্দ্র ও বিজ্ঞানীদের সম্পর্কিত কৌশলগত এবং স্পর্শকাতর তথ্য ও নথি হাতে পেয়েছে। দেশটির গোয়েন্দা মন্ত্রী এই তথ্য জানিয়েছেন।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। এই তথ্যগুলো জুন মাসে ইরানের গোয়েন্দা বাহিনী দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এর আগে জুন মাসে প্রচারিত ইরানের একটি টেলিভিশন প্রতিবেদন অনুসারে, যদিও এই নথিগুলো সংগ্রহের অভিযান আরও আগে চালানো হয়েছিল, কিন্তু নথির বিশাল পরিমাণ এবং সেগুলোকে নিরাপদে দেশে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার কারণে খবরটি গোপন রাখা হয়েছিল। এই বিশাল সংখ্যক নথি নিরাপদে দেশে পৌঁছানোর পরই খবরটি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, তথ্যগুলো একটি গোপন অভিযানের মাধ্যমে বের করে আনা হয়েছে এবং এতে নথি, ছবি এবং ভিডিওসহ বিপুল পরিমাণ সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বুধবার রাতে রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেন, ‘আগে থেকে প্রত্যাশিত এই ডাটাবেস নথিগুলোর সফল স্থানান্তর গোয়েন্দা এবং অপারেশনাল কার্যক্রমের একটি শক্তিশালী সমন্বয়েরই অংশ।’

খাতিব বলেন, ‘দেশে স্থানান্তরিত এই মূল্যবান গুপ্তধনে জায়নবাদী শাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত লাখ লাখ পৃষ্ঠার বিভিন্ন ও মূল্যবান তথ্য রয়েছে। এই নথিগুলোর মধ্যে রয়েছে দখলকৃত ভূখণ্ডের শাসকগোষ্ঠীর পূর্ববর্তী ও চলমান অস্ত্র প্রকল্প, পুরোনো পারমাণবিক অস্ত্র আপগ্রেড ও পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের প্রকল্প, যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে তাদের যৌথ প্রকল্প, এবং পারমাণবিক অস্ত্রের প্রশাসনিক কাঠামো ও এর সঙ্গে জড়িতদের সম্পূর্ণ তথ্য।’

গোয়েন্দা মন্ত্রী জানান, এই নথিগুলোতে অমানবিক অস্ত্র প্রকল্পের গবেষক, বিজ্ঞানী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামের তালিকাও রয়েছে, যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কর্মরত আমেরিকান ও ইউরোপীয় বিজ্ঞানীরাও অন্তর্ভুক্ত আছেন। তাদের স্থাপনা, কোম্পানি এবং সব সহযোগীর ঠিকানাও এতে রয়েছে। ১৮৯ জন ইসরায়েলি পারমাণবিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞকে শনাক্ত করা হয়েছে।

গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (IAEA) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি’র বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজও সম্প্রচার করে। ইরান সাম্প্রতিককালে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে আগ্রাসনের জন্য গ্রোসিকে দায়ী করে।

খাতিব বলেন, ‘দেশের পারমাণবিক সংস্থা, সামরিক প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ নাগরিকেরা ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই বিশাল পরিমাণ নথি সংগ্রহের এবং শাসনের জটিল সুরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সেগুলো হস্তান্তরে সহযোগিতা করেছে। এই সহযোগিতার দুটি প্রধান কারণ ছিল; প্রথমত, আর্থিক উদ্দেশ্য এবং অর্থ গ্রহণ, এবং দ্বিতীয়ত, শাসনের দুর্নীতিবাজ ও অপরাধী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তীব্র ঘৃণা, যা তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে তাদের পরিচালিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে বলছি, ইরানের পানির সমস্যা নিয়ে কাজ করার চেয়ে তার নিজের কর্মীদের জীবিকা নির্বাহের বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগ দেওয়া ভালো, যারা আয় রোজগারের জন্য আমাদের সাথে সহযোগিতা করেছে এবং এখনও তা চালিয়ে যাচ্ছে।’

গোয়েন্দা মন্ত্রী আরও বলেন, ‘জায়নবাদী শাসনের জনগণের মধ্যে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টার গোপন রহস্য আমি সবার কাছে প্রকাশ করছি; এই প্রচেষ্টা ১২ দিনের যুদ্ধের ঐতিহাসিক পরাজয় এবং ইমাম মাহদীর অজ্ঞাত সৈন্যদের গভীর অনুপ্রবেশের ফল, যা শাসনের গভীরতম সুরক্ষা স্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে।’

সারাবাংলা/এইচআই

ইরান ইসরায়েল পারমাণবিক কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর