Friday 26 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সবজি ও চালের দাম কমলেও বাড়তি তেলের দাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:০৯ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৩৩

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। খোলা সয়াবিন ও পামওয়েল তেলের দাম লিটারে বেড়েছে ৫ টাকা। বাজারে মাছের দাম চড়া থাকলেও কিছুটা কমেছে চাল ও সবজির দাম। কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে পেয়াজের ঝাঁচও।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, বিজয় সরণীর কলমিলতা, মহাখালীর বউবাজার ও শেওড়াপাড়ার ইব্রাহিমপুর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করলেও মাছ ও মাংসের বাজার চড়া। সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দামই বেড়েছে। বেড়েছে গরীবের ইলিশ খ্যাত পাঙাশ-তেলাপিয়ার দামও।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে সয়াবিন তেলে দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব সরকার মেনে নেয়নি। সে কারণে এখন বাজারে তৈরি হয়েছে এই অস্থিরতা।

বিজ্ঞাপন

পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি, তবে কমিশন কমিয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এতে বাজারে বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েলের দাম। গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে এই দুই ধরনের তেলের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ টাকার মতো।

বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, বাজারে এখন নাজিরশাইল চাল ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহেও তা ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। মোটা চালের মধ্যে পায়জাম ও স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়, যা কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের চাটখিল রাইস এজেন্সির মালিক বেলাল হোসাইন সারাবাংলাকে জানান, ভারত থেকে চাল আসার কারণে চালের দাম কমেছে৷ তবে দেশি যেগুলো মিনিকেট আছে, সেগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।

এদিকে, বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।

এক মাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে গরু ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি ও খাসি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আর মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ গুড়া মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, ইলিশের বাজার এখনো চড়া রয়েছে। সবচেয়ে বড় সাইজের অর্থাৎ ১ কেজি ২০০ থেকে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর সবচেয়ে ছোট সাইজের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবজির বাজারে দেখা গেছে, বেগুন ৫০ টাকা , চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেরশ ৬০ টাকা, ককরোল ৮০ টাকা, কড়লা ১০০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে ঝালি কুমরা ৫০ টাকা ও লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা পিসে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা কেজি, কলার হালি ৫০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা কেজি, কচুর মুখি ৪০ টাকা, শশা ৫০ ও টমেটো ১৬০ টাকা, সিম ১৮০ টাকা ও কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ৮০ টাকার নিচে পেপে ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ ও ঢেরশ ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

শেওড়াপাড়ার ইব্রাহিমপুর বাজারের কাঁচাবাজারের দোকানদার মহিউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবজির দাম অনেকটা কমছে। আগের চেয়ে কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। ১০০ টাকার নিচে তরকারি ছিলোনা। এখন অনেক তরকারিই ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে সবজির দাম আরও কমে যাবে। কারণ সামনে শীতের মৌসুম আসছে। বাজারে নতুন সবজি আসতে শুরু করেছে। ফুলকপি ও পাতাকপি বাজারে আসা শুরু হচ্ছে। এ কারণে বাজারে সবজির দাম অনেকটাই কমেছে।’

এদিকে, রসুন ১৬০ টাকা, মসুর ডাল ভারতীয় ১২০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে৷

অন্যদিকে, এখন এক কেজি প্যাকেটেজাত আটা কোম্পানি ভেদে ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। খোলা আটার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন কোম্পানির ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসডব্লিউ

চাল বাজার দর মাছ সবজি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর