ভিয়েতনামের উপকূলে শক্তিশালী টাইফুন ‘বুয়ালোই’ আছড়ে পড়লে আটজন নিহত হয়েছেন এবং আরও সতেরো জন নিখোঁজ হয়েছেন। প্রবল বাতাস ও বৃষ্টির কারণে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।
সোমাবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, টাইফুনটি সোমবার ভোরে দেশের উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানে। এ সময় সমুদ্রের ঢেউ প্রায় আট মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে ওঠে।
সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, কুয়াং ট্রি প্রদেশের কাছে বিশাল ঢেউ দুটি মাছ ধরার নৌকাকে আঘাত হানলে সতেরো জন জেলে নিখোঁজ হন। এ ছাড়াও আরও একটি মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সির খবর অনুসারে, নিন বিন প্রদেশে প্রবল বাতাসের কারণে আটজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা আরও জানায়, হুয়ে শহরে বন্যার জলে ভেসে গিয়ে একজন এবং থান হোয়া প্রদেশে গাছ ভেঙে পড়ে আরও একজন নিহত হয়েছেন।
এনগে আন প্রদেশের হো ভ্যান কুইন নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দরজা যেন প্রবল বাতাসে খুলে না যায়, সেই ভয়ে আমি সারা রাত জেগে ছিলাম।’ ৪৫ বছর বয়সী নগুয়েন তুয়ান ভিন বলেন, ‘আমি অনেক ঝড় দেখেছি, কিন্তু এটি সেগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী।’
এ পর্যন্ত বুয়ালোই-এর আঘাতে ২৪৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর ধান ও অন্যান্য ফসল ডুবে গেছে, এবং কয়েকটি এলাকায় যাতায়াত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদনে শিল্পাঞ্চলের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়নি, যদিও ফক্সকন, লাক্সশেয়ার, ফর্মোসা প্লাস্টিকস এবং ভিনফাস্টের মতো বড় কিছু কারখানার কাছাকাছি এলাকা দিয়ে ঝড়টি গেছে।
টাইফুন আঘাত হানার আগে সরকার ২৮ হাজার ৫০০-এর বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। কেন্দ্রীয় প্রদেশগুলোর চারটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়ায় শত শত ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়।
শনিবার থেকে টাইফুনের প্রভাবে ভিয়েতনামের বেশিরভাগ অংশে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয় এবং কর্তৃপক্ষ গুরুতর বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে। আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের কিছু অংশে ৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থা জানায়, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ টাইফুনটি এনগে আন প্রদেশ পেরিয়ে লাওসের দিকে চলে যেতে শুরু করে এবং এর সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ কমে ১১৭ কিলোমিটার থেকে ৭৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টাতে দাঁড়ায়।