Tuesday 30 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নদী ভাঙনের কবলে পারবিঞ্চপুর, বিলীন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৮ | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৫১

নদী ভাঙনের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পারবিঞ্চপুর গ্রাম। নদী ভাঙনের মুখে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষক পরিবারগুলো।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত পারবিঞ্চপুর বাজারের ১০টিরও বেশি দোকানঘর এক রাতে বিলীন হয়েছে। হঠাৎ দোকানঘর হারিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন দিশেহারা। কৃষিনির্ভর পরিবারগুলোও পড়েছে চরম সংকটে।

এ বিষয়ে চায়ের দোকান মালিক দিলরুবা বলেন, ‘আমি একজন নারী হয়ে বছরের পর বছর ধরে এই চায়ের দোকান দিয়েই সংসার চালাতাম। দোকান নদীতে চলে যাওয়ায় এখন আর কোনো আয়-রোজগারের পথ নেই। ছেলেমেয়েদের কীভাবে খাওয়াবো সেই চিন্তায় দিন কাটছে।’

বিজ্ঞাপন

মুদি, চা ও কসমেটিকসের দোকান মালিক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘একসঙ্গে সবকিছু হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। দোকানই ছিল আমার একমাত্র ভরসা। সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন পরিবার নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। কোথায় যাবো, কী করবো বুঝতে পারছি না।’

স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল শেখ জানান, ‘প্রতিবছরই এখানে ভাঙন হয়। কিন্তু এবার এত ভয়াবহ হবে তা কল্পনাও করিনি। একরাতে পুরো বাজার ভেঙে গেছে। যদি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হয় তবে পুরো এলাকা নদীতে বিলীন হবে।’

মুদি দোকান মালিক নজরুল শেখ বলেন, ‘এই দোকান থেকে যা আয় হতো, তাই দিয়ে সংসার চলত। এখন দোকান হারিয়ে আমরা পথে বসেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না হলে আমাদের বাঁচার উপায় নেই।’

চা দোকান মালিক আতিয়ার মিনা বলে, ‘ছোট্ট দোকান ছিল, সেটাই আমাদের পরিবারের ভরসা। নদী গিলে ফেলেছে দোকানটা। এখন আর কোনো কাজ নেই। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। সরকার যদি দ্রুত সাহায্য না করে তবে আমাদের পথে বসতে হবে।’

পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘এভাবে বাজার ভেঙে গেলে পুরো এলাকার অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। শুধু বাজার নয়, রাস্তা, মসজিদ, স্কুলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকার যদি দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করে তবে অচিরেই পারবিঞ্চপুর বাজার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজীৎ কুমার সাহা বলেন, ‘পুরুলিয়া্ ইউনিয়নে পার বিষ্ণুপুর বাজারে ভাঙ্গনের খবর শোনা মাত্রই অফিস থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি। সেখানে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে ভাঙন প্রতিরোধে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সারাবাংলা/জিজি

নদী ভাঙন পারবিঞ্চপুর বিলীন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর