এটি তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এ সম্পর্কে কবি নিজেই অকপটে লিখেছেন, ‘মনের কথা’ আমার একান্ত নিজস্ব ভাষাভঙ্গিতে ভালোলাগা, ভালোবাসা, রাগ-ক্ষোভ-দুঃখ-অভিমান, প্রতিরোধ-প্রতিবাদের প্রকাশ। এর কোনো একটি লেখার একটি লাইনও যদি কারও ভালো লাগে, একজন পাঠকেরও মনের কথার সঙ্গে মিলে যায়- সেটুকুই আমার পাওয়া। পাঠকের প্রতি কবির এই পরিপূর্ণ সমর্পণ প্রশংসনীয়।
বইটির উৎসর্গপত্রও ব্যতিক্রমী। সেখানে লেখা হয়েছে- ‘সেই মানুষগুলোকে, যারা সবসময় পেছন থেকে টেনে ধরে আমার সামনে চলার পথ বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছেন’। কী কঠিন অভিমান! কবিতায় লিখেছেন, ‘এমন একটা দেশের কথা ভাবি। আগামী প্রজন্মের মাথা তুলে, বুক ফুলিয়ে চলার বাংলাদেশ।’ লিখেছেন, ‘ভালো থেকো তুমিও, এভাবেই।
জীবনের সব প্রতিকূলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কিংবা ‘কবরে প্রাসাদ পাবে, পালঙ্কে ঘুমাবে- তেমন কিছু তুমি করে যাচ্ছ কি?’ এমন অনেক মনোহর, বুকের ভেতর প্রত্যাশা, প্রেম ও প্রতিবাদের অনুভূতি জাগানো পঙ্ক্তি ছড়িয়ে আছে বইটির বিভিন্ন কবিতায়। আগস্ট ২০২৫-এ বইটি প্রকাশ করেছে টাঙ্গন প্রকাশন। প্রচ্ছদ: তাসনীম তাহের। বইটি এরই মধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
মনের কথা কাব্যগ্রন্থের ভূমিকায় কবি হাসান হাফিজ বলেছেন, “সুকুমার শিল্পের অন্যতম আদি একটি মাধ্যম হলো কবিতা। বড়ই সূক্ষ্ম, বড়ই রহস্যময়ী। কবিতার টানে, মায়ায় সম্মোহিত হয়েছেন আবু তাহের খোকন। কবিতার ভুবনে তাঁকে স্বাগত, অব্যশই অভিনন্দন। নিরাভরণ সারল্যে আপন অনুভূতি, আবেগ, দুঃখ, কষ্ট-বঞ্চনা তিনি তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। সমাজ ভাবনা ও দেশচিন্তনও প্রস্ফুটিত, মনের কথা মীমপ্রতিফলিত হয়েছে তার কবিতা সম্ভারে। কোনোমতেই জটিল নয় সেইসব উপলব্ধি ও বোধের চিত্রায়ণ। ফলে এই গ্রন্থের কবিতাবলি বৈচিত্রের স্বাদে হয়ে উঠেছে ভরপুর ও অনন্য। আশা করি ‘মনের কথা’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠকের ভালো লাগবে।”
আবু তাহের খোকন পেশায় ফটোসাংবাদিক। দেশ, মাটি, মানুষ, প্রকৃতির নান্দনিক ছবি তুলেছেন অগণিত। দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে তার কৃতি ও কীর্তি ছড়িয়ে পড়েছে বহির্বিশ্বে। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন দেশ-বিদেশের অনেক সম্মাননা, পদক-পুরস্কার। আবু তাহের খোকন ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’র শুরু থেকেই প্রধান ফটোসাংবাদিক পদে কর্মরত। এর আগে তিনি দ্য নিউ নেশন, দ্য মর্নিং সান, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, দ্য নিউজ টুডে ও দ্য নিউ এজ পত্রিকায় কাজ করেছেন।
দেশ-বিদেশের প্রাপ্ত স্বীকৃতির মধ্যে রয়েছে -এশিয়া প্যাসিফিক কালচারাল সেন্টার ফর ইউনেস্কো জাপান অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৪,১৯৯৫ ও ১৯৯৬, ইউনাইটেড ন্যাশন অ্যাওয়ার্ড ফ্লাড ইন বাংলাদেশ ১৯৯৮, মোমেন্টস ইন্টিমেসি লাফটার কিনশিপ অ্যাওয়ার্ড নিউজিল্যান্ড ২০০০, চায়না প্রেস ফটো কন্টেস্ট অ্যাওয়ার্ড ইন চায়না ২০০৪, উইসডেন-এমসিসি ক্রিকেট ফটোগ্রাফ অব দ্য ইয়ার ২০১৫-২০১৬ লন্ডন, ‘জুম-ইন পোভার্টি’ গ্লোবাল ফটো কন্টেস্ট অরগানাইজড বাই দ্য জিনহুয়া নিউজ এজেন্সি অ্যান্ড দ্য ইউএনডিপি চায়না ২০১১ এবং প্রেস ফাউন্ডেশন অব এশিয়া অ্যাওয়ার্ড বাংলাদেশ অ্যান্ড মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার ২০০২। এর আগে ২০১৬ সালে আবু তাহের খোকনের ‘সাদাকালো সংবাদচিত্র সংগ্রহ’ প্রকাশিত হয়েছিল নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে।