যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বহুল সমালোচিত বাণিজ্য নীতির পক্ষ নিয়ে বলেছেন, শুল্ক আমার প্রিয় শব্দ। আমি শুল্ক শব্দটি ভালোবাসি। আমরা দ্রুত ধনী হচ্ছি।
বুধবার (১ অক্টোবর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।
ট্রাম্প জানান, বহু বছর ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছিল, কিন্তু তার আরোপিত শুল্ক নীতি সেই বাণিজ্য ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ফিরিয়ে এনেছে।
কোয়ান্টিকোতে মেরিন কর্পস বেসে বক্তব্য দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি শুল্ক পছন্দ করি। সবচেয়ে সুন্দর শব্দ, যদিও এখন আর আমার তা বলার অনুমতি নেই। শুল্ক আমার প্রিয় শব্দ। আমি শুল্ক শব্দটি ভালোবাসি। আমরা দ্রুত ধনী হচ্ছি। আমাদের সামনে সুপ্রিম কোর্টে একটি বড় মামলা আছে, কিন্তু আমি কল্পনাও করতে পারি না (যে আমরা হারব), কারণ অন্যান্য দেশগুলো আমাদের সঙ্গে এমনটাই করে এসেছে।”
ট্রাম্প দাবি করেন, তার শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার আয় করছে, যা অনেকগুলো যুদ্ধজাহাজ কেনার জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন, ‘আমরা ট্রিলিয়ন ডলার তুলে এনেছি। আমরা আবার ধনী। যখন আমরা এটি শেষ করব, তখন আমাদের যা সম্পদ হবে, তা অন্য কারও হবে না। অন্যান্য দেশ বছরের পর বছর ধরে আমাদের সুবিধা নিচ্ছিল… এখন আমরা তাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছি। কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ আসছে, তা আমরা আগে কখনো দেখিনি। কিছুদিন আগে তারা ৩১ বিলিয়ন ডলার খুঁজে পেয়েছে… ৩১ বিলিয়ন ডলার। এটি অনেক যুদ্ধজাহাজ কেনার জন্য যথেষ্ট।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তার জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের আনা মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে নির্ধারিত আছে।
প্রেসিডেন্টের জরুরি ক্ষমতা ব্যবহারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এই মামলাগুলো করা হয়েছে। গত মাসে ইউএস কোর্ট অব আপিলস ফর দ্য ফেডারেল সার্কিট একটি নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছিল, যেখানে বলা হয়, বৈশ্বিক শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট (IEEPA) ব্যবহার অবৈধ।
যদিও সুপ্রিম কোর্টে শুনানি বাকি, তবে ইউএস বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার ইতিমধ্যে সতর্ক করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট কিছু শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা করলেও ট্রাম্প প্রশাসন তার বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপ অব্যাহত রাখবে।
ফাইনান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রিয়ার আত্মবিশ্বাসী যে ট্রাম্প প্রশাসন মামলা জিতবে, কিন্তু যদি তারা হেরেও যায়, তবে শুল্ক বহাল রাখার জন্য তারা বিকল্প আইনি ব্যবস্থার আশ্রয় নেবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মামলা নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী… আমরা বিশ্বাস করি, আদালত জরুরি অবস্থার বিষয়ে প্রেসিডেন্টকেই সমর্থন জানাবে, এবং এই আইনের অধীনে শুল্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।’
তবে মার্কিন এই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ‘শুল্ক নীতিগত কাঠামোর অংশ হয়েই থাকবে এবং গত আগস্টে আরোপিত তথাকথিত পারস্পরিক শুল্ক নীতিই ভবিষ্যতে কেমন হতে চলেছে তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে জয় বা পরাজয় যা-ই হোক না কেন, বাণিজ্য নিয়ে আমাদের এভাবেই এগোতে হবে। এটি একটি কাঠামো।‘