রংপুর: অটোরিকশা লাইসেন্স নিয়ে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে রংপুরে সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি এনায়েত আলী রকিকে (৩৮) গ্রেফতানর করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ান মনিরুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর রায় সাহেব বাজার এলাকা থেকে র্যাব-১০ এর সহযোগিতায় মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা পুলিশ রকিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার রকি রংপুর নগরীর সিঙ্গারের গলি, জাহাজ কোম্পানির মোড় এলাকার হায়দার আলীর ছেলে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদ, একুশে টেলিভিশন ও বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক লিয়াকত আলী বাদলকে রংপুর নগরীর কাচারি বাজার থেকে জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে রকির নেতৃত্বে একটি দল অপহরণ করে। পরে তাকে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে নিয়ে মারধর করা হয় এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার কাছে জোরপূর্বক ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। নতুন ভবনের ফটকে আটকে আরও নির্যাতনের শিকার হন তিনি।
বাদল অভিযোগ করেন, ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি দৈনিক সংবাদে “রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকার বাণিজ্যের পাঁয়তারা” শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। এর জেরেই তাকে টার্গেট করা হয়। তিনি উম্মে ফাতিমাসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন।
এ মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রকি ছাড়াও রয়েছেন নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়ার রকিবুল ইসলাম সাগর এবং পূর্ব অভিরাম ডাক্তারপাড়ার রতন মিয়া। তারা বর্তমানে কারাগারে।
এ ঘটনায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমাকে বদলি করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করা হয়েছে। সাংবাদিক সমাজ এই বদলিকে শাস্তির পরিবর্তে “পদোন্নতি” হিসেবে দেখছে এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এছাড়া সিটি করপোরেশনের তিন কর্মকর্তা—মিজানুর রহমান মিজু (ট্রেড লাইসেন্স শাখা প্রধান), জাহাঙ্গীর কবির শান্ত (প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা) এবং তম্ময় (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা)—কে অন্য দফতরে বদলি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তারা মূল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং জড়িত কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি জানান।
রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।