Saturday 04 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এদেশ মুসলমানদের দেশ: শায়েখে চরমোনাই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:১৬ | আপডেট: ৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩৫

বক্তব্য দিচ্ছেন শায়েখে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘১৯৪৭ সালে কেনো, কিসের ভিত্তিতে আন্দোলন হয়েছিল, কেন দেশ ভাগ হয়েছিল। ভাষার ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়নি, ভৌগলিক কারণে ভাগ হয়নি। ভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। এটা কেন আপনার বলতে লজ্জা হয়। ১৯৪৭ সালে মুসলমানরা মুসলমানদের জন্যে ভাগ করেছিল। আজকে আলেমদের এই কথা বলতে লজ্জা হয়, মুসলমানদের এই কথা বলতে লজ্জা হয়। ১৯৪৭ সালে মুসলমানদের জন্য ধর্মের ভিত্তিতে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। এদেশ মুসলমানদের দেশ।’

শনিবার (৪ অক্টোবর)দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন আয়োজিত ‘স্বাধীনতার পথরেখা ৪৭, ৭১, ২৪: প্রেক্ষিত আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে এই দেশ কিসের জন্য স্বাধীন হয়েছিল। স্বাধীন হয়েছিলাম ৪৭-এ, আর পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়েছি ১৯৭১ সালে। ১৯৪৭ সালে যদি ভারত থেকে আমরা স্বাধীন না হতাম, তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত আন্দোলন করতে পারতেন, কিন্তু স্বাধীন হতে পারতেন না। কাশ্মির, পাঞ্জাব, হায়দ্রাবাদ সব স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল। কিন্তু, ভারত দখল করে নিয়েছে।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের মাথায় রাখা দরকার, আমি একজন মুসলমান। আমি যদি মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিই তাহলে এদেশ স্বাধীন হবে। আর যদি মুসলাম পরিচয় না দেন, তাহলে আমেরিকা দখল করবে, চীন তাদের থিউরি নিয়ে আসবে, রাশিয়া আসবে, আর ভারত তো তার আদর্শ বাস্তবায়ন করেই চলছে। আর আমি যখন মুসলমান থাকবো, তখন ভারত আমাদের এখানে তাদের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আমেরিকা পারবে না, চীন পারবে না, রাশিয়া পারবে না। সেক্যুলার পারবে না, ডেমোক্রেসি পারবে না। যখন কারও স্বামী থাকে তখন কেউ তার দিকে তাকায় না। যখন স্বামীহীন থাকে তখন সবাই তাকাতে চায়। এটা সমাজের একটা কথা বললাম। আপনি যখন নিজের আদর্শ লালন করবেন না, প্রত্যেকে তার আদর্শ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি কি ভেবেছেন ভারতের মধ্যে থেকে আমাদের যে কাটাতারের বেড়া, এটাই কি আমাদের মূল পার্থক্য? না, কাটাতারের বেড়া তুলে দিতে এক মিনিট সময় লাগে না। ভারতের সঙ্গে আমাদের বড় পার্থক্য হলো, আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান। এজন্য ওরা চিন্তা করতেছে মুসলমানদের যতক্ষণ পর্যন্ত ধ্বংস না করা যাবে, তাদের চেতনাকে নষ্ট না করা যাবে. ততদিন পর্যন্ত এই দেশকে দখল করা যাবে না। এজন্য ওদের মুল টার্গেট হলো আমাদের চেতনাকে নষ্ট করা।

১৯৭১ সালের পর আমরা স্বাধীন মুক্ত। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর যারাই এই দেশ শাসন করেছে, তারা আমাদের ইসলাম নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি। প্রত্যেকে শাসকের ভিন্ন চিন্তা ছিল। ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তা ছিল না।

আসুন না ২৪-এর আন্দোলনের পর যেহেতু আমরা স্বাধীন হয়েছি, আমরা আর চীন, আমেরিকা, ভারতের গোলামী করতে চাই না। আমরা আমাদের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা একজন মুসলমান, আমাদের আদর্শ কুরআন ও সুন্নাহ। যদি একজন সেক্যুলার, একজন নাস্তিক একজন বামপন্থী তারা বুক ফুলিয়ে বলতে পারে, আপনি মুসলমান হিসেবে আপনার আদর্শ বলতে পারেন না কেন। আপনার বাধা কিসের।’

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ‘আজকে যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই তাদের অবস্থা আপনারা দেখেছেন। এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করছে না। আজকে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ধর্মভিত্তিক হতে পারে, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ধর্ম পরিবর্তন করতে পারে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে।’

ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদের সভাপতিত্বে গোল টেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মুফতি জাহিদুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, যুব মজলিসের সহসাধারণ সম্পাদক মুফতি সাব্বির আহমদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইউসুফ আহমদ মানসুর, ইসলামী যুব আন্দোলনের সহকারি সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন প্রমূখ।

সারাবাংলা/এমএমএইচ/জিজি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মুফতি ফয়জুল করীম