Sunday 05 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তৃতীয় স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ গুমের দায়ে স্বামীর ফাঁসি ‎

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ অক্টোবর ২০২৫ ২০:১৪ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২২

খয়েরি গেঞ্জি পরিহিত সোহরাব হোসেন আকন। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল: বরিশালে তৃতীয় স্ত্রীকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার দায়ে সোহরাব হোসেন আকন (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মোহা. রকিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

‎আসামি সোহরাব হোসেন আকন মুলাদী উপজেলার তেরচর গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মোখলেছুর রহমান বাচ্চু।

‎মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সোহরাব হোসেন আকনের তৃতীয় স্ত্রী এলমা আক্তার ওরফে লিমার বাড়ি মুলাদী উপজেলার চরকালিখোলা গ্রামে। লিমা তার প্রথম স্বামী ফেরদৌসকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। সোহরাব সে বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। এক পর্যায়ে তিনি ফেরদৌসকে হত্যার হুমকি দিয়ে লিমাকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। পরে লিমাকে বিয়ে করে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সে দাবিতে লিমাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। লিমার পরিবার যৌতুক দিতে অপারগতা জানালে তাকে নির্যাতন করতে থাকেন সোহরাব হোসেন। ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ গুম করেন। এ ঘটনায় পরদিন লিমার বোন ডলি বেগম মুলাদী থানায় মামলা করেন।

‎আদালতের বেঞ্চ সহকারি আজিবর রহমান জানান, মুলাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জুবায়ের তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২০ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সোহরাবকে একমাত্র আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। আদালত ১১জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

‎তিনি আরও জানান, এর আগে ২০০৯ সালে যৌতুকের দাবিতে দ্বিতীয় স্ত্রী ও অন্তঃস্বত্ত্বা মিলি বেগমকে হত্যার পর লঞ্চ থেকে মরদেহ মেঘনা নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন সোহরাব হোসেন। সেই হত্যা মামলায় বরিশালের একটি আদালত ফাঁসির রায় দিয়েছিল। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে উচ্চ আদালতের বিচারক ফাঁসির রায়ের পরিবর্তে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সোহরাবের বিরুদ্ধে তৃতীয় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়।

বিজ্ঞাপন

‎রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোখলেছুর রহমান বাচ্চু বলেন, দীর্ঘসময় ধরে চলা এ মামলায় আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন ১১জন সাক্ষী। পরে রোববার লিমা বেগমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার দায়ে সোহরাবকে ফাঁসি ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারক। এছাড়াও মরদেহ গুম করায় সোহরাবকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জিজি

ফাঁসি মরদেহ গুম