চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন ৪১৫ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়ে আলোচনায় এসেছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দুই শিক্ষার্থী। উভয়ে লড়ছেন নির্বাহী সদস্য পদে।
ছাত্রদলের ঘোষিত প্যানেল থেকে নির্বাহী সদস্য পদে লড়ছেন মিজান মিয়া এবং ছাত্রশিবিরের ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে আকাশ দাশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনায় এ দুই প্রার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছেন।
ছাত্রদলের মিজান মিয়া সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে জানালেন, তার পরিবার বিএনপির সমর্থক। ছাত্রদলও তার পছন্দের সংগঠন। ছাত্রদল সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছে, শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছে- এ বিবেচনায় তিনি নির্বাচনের জন্য ছাত্রদলের প্যানেলকে বেছে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। আমাদের খোঁজ খবর তো তেমন কেউ রাখে না। কিন্তু ছাত্রদল সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে। তাদের সঙ্গে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে। তাছাড়া আমার পরিবার বিএনপির রাজনীতি সমর্থন করে। তাই ছাত্রদল প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছি।’
নির্বাচিত হলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবেন জানিয়ে মিজান মিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ব্রেইল তাদের মৌলিক অধিকার, কিন্তু তারা তা পাচ্ছে না। আমি নির্বাচিত হলে মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করব।’
সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের প্রার্থী আকাশ দাশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, আবার সনাতন সম্প্রদায়ের- শিবিরের প্যানেলে তার প্রার্থী হওয়া নিয়ে কৌতুহল আছে সবার মধ্যে। তবে আকাশের সরাসরি বক্তব্য, ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম পছন্দ হওয়ায় তাদের প্যানেলে যোগ দিয়েছেন।
আকাশ দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের যে কার্যক্রমগুলো দেখেছি, সবগুলোই শিক্ষার্থীবান্ধব। গত একবছর ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করেছে। হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দিয়েছে। তাছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইলের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছে। তাই ভালো লাগার জায়গা থেকে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’
নির্বাচনে বিজয়ী হলে তো করবেনই, পরাজিত হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবেন বলে জানান আকাশ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় অনেক মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। তারা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। এটা আমার জন্য অনেক ভালো লাগার বিষয়। আমি নির্বাচিত হলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করব। আর যদি নির্বাচিত না-ও হই, তবুও তাদের পাশে থেকে কাজ করব।’
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ অক্টোবর চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, ১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১ সালে এবং ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ চাকসুর নির্বাচন হয়।