ঢাকা: জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে উঠবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, “যদি আমরা জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় না আসি, তাহলে নতুন অভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী—তখন কেউ পালানোর সুযোগ পাবেন না।”
রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মঞ্জু অভিযোগ করেন, “অহেতুক সাংবিধানিক বিতর্ক তুলে রাজনৈতিক সংকটকে দীর্ঘায়িত করা হলে পরিস্থিতি আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। এখন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি হচ্ছে, যা জনমনে বিরক্তি তৈরি করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে ‘সংবিধান আদেশ’ দিতে পারেন। কারণ, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা দুইটি ক্ষমতা অর্জন করেছি—একটি হচ্ছে সংশোধনের ক্ষমতা, অন্যটি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা। তাহলে নতুন করে এখতিয়ার তোলার প্রয়োজন কেন?”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “সেই সংকট আমরা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফলে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সমাধান এসেছে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি আবারও সাংবিধানিক বিতর্ক তুলে বাস্তবায়ন বিলম্বিত করা হয়, তাহলে নতুন গণ-অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়বে। তখন পাঁচ-সাতটি হেলিকপ্টার লাগবে, কারণ এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
দেশের মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন মঞ্জু। তিনি বলেন, “এই অনৈক্য দূর করে, সাংবিধানিক বিতর্ক সরিয়ে এখন সবাইকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। বিএনপিকেও অনুরোধ করেছি, তারা যেন কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নেয়।”
এবি পার্টির পক্ষ থেকে তিন ধাপে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেন মঞ্জু:
১. রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে ‘সংবিধান আদেশ’ জারি,
২. জনগণের মত যাচাইয়ের জন্য গণভোট,
৩. সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে মতামত গ্রহণ।
তিনি বলেন, “আমরা সংবিধান পরিবর্তন করতে পারি, তবে তা হতে হবে জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে। গণভোটের মাধ্যমে সেই সম্মতি যাচাই করাই যুক্তিযুক্ত।”
তিনি আরও জানান, গণভোটের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতোমধ্যে সমঝোতা তৈরি হয়েছে। জামায়াত বলছে, ‘সংবিধান আদেশ’ দিয়েই বাস্তবায়ন সম্ভব। আর এবি পার্টির মতে, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মত নিশ্চিত হলে আর কোনো বিরোধিতার সুযোগ থাকবে না।