ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন আলাদা ব্যালটে ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সনদের বাস্তবায়ন জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া উচিত, যাতে তা নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো বিতর্ক না থাকে।
রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত ধাপে আছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো একটা সম্মিলিত সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছি। তবে জনগণের পক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে হবে গণভোটের মাধ্যমেই।’
তিনি জানান, নির্বাচনের দিন সাধারণ ভোটের পাশাপাশি একটি আলাদা ব্যালটে জনগণের কাছে জানতে চাওয়া হবে তারা কি জুলাই সনদের পক্ষে?
গণভোট আয়োজনের সাংবিধানিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আর্টিকেল ১৪২-এর রেফারেনডাম বিধান আওয়ামী লীগ সরকার বাতিল করেছিল। তবে তা হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশনকে একটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এখতিয়ার দেওয়া সম্ভব, যাতে নির্বাচনের দিনই রেফারেনডাম হয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি সংসদে জুলাই সনদের বিরোধী এমপিরা সংখ্যাগরিষ্ঠও হন, গণভোটে যদি জনগণ সনদের পক্ষে রায় দেয়, তবে সেই সিদ্ধান্ত সকল সংসদ সদস্যকে মানতেই হবে। কারণ, গণরায়ই সার্বভৌম সিদ্ধান্ত।’
জুলাই সনদের কিছু ধারা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকার বিষয়েও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘সব দল সনদে স্বাক্ষর করবে, তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে এবং তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও থাকবে। তবে কেউ যদি নির্বাচনে জিতে ম্যান্ডেট পায়, তখন তারা তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।’
বর্তমান সরকারের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই সরকার আর্টিকেল ১০৬ অনুসারে গঠিত হয়েছে—রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য, সংবিধান আদেশ জারির জন্য নয়। সংবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা একমাত্র জনগণের। তাই জনগণের পক্ষ থেকেই চূড়ান্ত রায় আসা উচিত।’
বৈঠক শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের জানান, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।’