পঞ্চগড়: এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘মুলা-বেগুন মার্কা নির্বাচন কমিশনের তালিকায় থাকা তাদের রুচিবোধের বহিঃপ্রকাশ। দেশের কি মার্কার অভাব পড়েছে? ইসির তালিকায় এমন প্রতীক থাকবে কেন?’
রোববার সন্ধ্যা ৬টায় পঞ্চগড়ের শের-ই-বাংলা পার্কে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস বলেন, ‘যে ধরনের প্রতীক মানুষের হাসির খোরাক জোগায়, তা নির্বাচন কমিশনের তালিকায় কেন থাকবে—এটাই বড় প্রশ্ন। এটি তাদের রুচিবোধেরই প্রতিফলন। মার্কা বাছাইয়ে এমন হাস্যকর প্রতীক রাখা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। দেশের কি মার্কার অভাব পড়েছে? আশা করি, কমিশন দ্রুত বিষয়টি সংশোধন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত শাপলা প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেব। আইনগত কোনো বাধা না থাকায় আমরা শাপলার বিকল্প ভাবছি না। প্রয়োজনে সাদা বা লাল শাপলা—যেটিই হোক, তাতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে কমিশনের স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নেওয়া হবে না। তারা যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, আমরা রাজনৈতিকভাবে তার জবাব দেব।’
মহানন্দা নদীতে ভারতের হঠাৎ স্লুইচ গেট খুলে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সারজিস আলম বলেন, ‘ভোরে ৯টি গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাবান্ধার একটি গ্রাম ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীর পাড় ভাঙছে। ভারত যদি প্রতিবেশি হিসেবে থাকতে চায়, তবে তাদের আচরণও প্রতিবেশিসুলভ হতে হবে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মন চাইলে গেট বন্ধ রাখা, আবার ইচ্ছেমতো খুলে দেওয়া—এমন আচরণে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে অ্যান্টি-ইন্ডিয়ান সেন্টিমেন্ট বাড়বে। এতে দুই দেশের সম্পর্কের জন্য নেতিবাচক বার্তা যাবে।’
সারজিস আরও বলেন, ‘সব দিন কিন্তু ভারতের দিন নয়। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও দিন আসবে। আমরা সমতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আশা করি। আমরা বলতে চাই যতদিন তারা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে না দিচ্ছে বাংলাদেশের কাছে মানুষের কাছে যে সেন্টিমেন্ট তারা প্রত্যাশা করে তা কখনোই পাবে না।’
তিনি আরও জানান, বাংলাবান্ধার মহানন্দা নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণের সময় বিএসএফ বাধা দেয় এবং গুলি চালায়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নদীর পাড়ে ব্লক দিতে গেলে বিএসএফ গুলি ছোড়ে—এমন আচরণ বরদাশত করা হবে না। বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের জমি ও বসতভিটা রক্ষায় প্রস্তুত।’
এ সময় সারজিস জানান, জেলার পাঁচ উপজেলার ১২০টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এনসিপির মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার বরাদ্দ আনা হয়েছে।
মতবিনিময় শেষে গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে এনসিপি সদর উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক নয়ন তানবীরুল বারী, এনসিপি ও জাতীয় যুব শক্তির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।