ভারত: ‘ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভবিষ্যৎমুখী ও জনগণকেন্দ্রিক রাখতে আগ্রহী। দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ভারত। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে যেই সরকার ক্ষমতায় আসবে, তার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত দেশটি। ভারত আশা করে নির্বাচন দ্রুত হবে।’
সোমবার (৬ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সাউথ ব্লক হিসেবে পরিচিত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাব-এর একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এটি কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার জন্য নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বৈধতা নিশ্চিত করার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও জানান, নির্বাচন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হলে তা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে ভারত স্পষ্ট করেছে, জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তার সঙ্গে কাজ করতে তারা সদা প্রস্তুত। তবে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে সেটাই ভাল হবে। বাংলাদেশের মানুষ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী পছন্দের সরকার নির্বাচন করুক এটাই প্রত্যাশা করে ভারত।
তিনি বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কেমন হবে, সেটা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিষয়। সিভিল সোসাইটিকে ঠিক করতে হবে, নির্বাচন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই মাথায় রেখেই নিশ্চয় বাংলাদেশ নিজেদের নির্বাচন আয়োজন করবে। কারণ এই নির্বাচন শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নির্বাচিত না হলেও, ভারত শুরু থেকেই এই সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন শুরুতেই। এ ছাড়াও, গ্লোবাল সাউথের সম্মেলনে প্রফেসর ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি এতে অংশ নিয়েছিলেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভারত দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়। একইসঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারত প্রতিবেশীদের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতাকে প্রাধান্য দেয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গেও সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে।’
‘শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের অনুরোধ এর বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে ভারত। এটা আইনি এবং বিচারিক বিষয়, তাই এই মুহুর্তে এর থেকে বেশি কিছু বলতে চাই না’, প্রশ্নের উত্তরে বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
তিনি জানান, আগের তুলনায় বাংলাদেশের জন্য ভারতের ভিসা ইস্যু বাড়ছে। আগামীতে এই হার আরও বাড়ানো হবে।
গঙ্গার পানি চুক্তি এবং তিস্তা প্রকল্প বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ দু’টি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে যৌথ কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চার হাজার কিলোমিটারের মতো সীমান্ত রয়েছে। নিরাপত্তা, মাদক চোরাচালান, অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভারতের সীমানায় এমন ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী নিজের ভূখন্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে।’
পুশইন বেড়েছে এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আগের প্রায় দুই হাজারের বেশি কেস ফাইল অনিষ্পত্তি থাকায় এখন সীমান্ত অতিক্রম করলে পাঠানো হয়।’