Monday 06 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ারের পরিবারের কাছে যুবদলের পরিচয়ে চাঁদাবাজি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:০৫ | আপডেট: ৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৪২

-ছবি : প্রতীকী

ঢাকা: বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের কাছ থেকে যুবদল পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

থানা সূত্রে জানা যায়, মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মরহুম খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী তানজিন হামিদ মিতুলের কাছ থেকে যুবদল নেতাকর্মী পরিচয়ে শুক্রবার রাতে নগদ ৮০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকার একটি চেক আদায় করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে কথিত যুবদল কর্মী শাওন (২৫), হাবিব (৩৫), সাজিদ (২২) ও সানি (৩৫) হাতিরঝিল থানার নয়াটোলা গ্রীনওয়ে এলাকার ৬৫৩ নম্বর বাসার ৪র্থ তলার ৪/বি ফ্ল্যাটে গিয়ে চাঁদা দাবি করে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সাবেক মহাসচিবের পুত্রবধূ তানজিন হামিদ মিতুল জানান, “শুক্রবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আমার বড় বোন শারমিন ওয়াদুদ নিপা আমাকে ফোন করে জানান যে, তার জরুরি ভিত্তিতে ১ লাখ টাকা প্রয়োজন। রাত ১১টা ২০ মিনিটে আমি তার বাসায় গেলে দেখি, চার যুবক সেখানে উপস্থিত।”

তিনি বলেন, “আমি জানতে চাই- কেন তারা সেখানে এসেছে। তখন চাঁদাবাজ শাওন কোমরে থাকা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা আমার বড় বোনের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা দাবি করে।”

তিনি আরও বলেন, “ভয়ে আমি রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে মগবাজার সিটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে সানিকে দিই এবং আরও ২০ হাজার টাকার একটি চেক (চেক নং ৪১০৩১৭৩) প্রদান করি।”

তিনি জানান, “পরের দিন শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে তারা আবারও আমার বড় বোনের বাসায় আসে এবং ফ্ল্যাট খালি করার জন্য হুমকি দেয়। তারা বলে, আগামী মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট খালি না করলে আমার বোন ও তার সন্তানদের হত্যা করা হবে।”

পরিবারটি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানা গেছে।

তানজিন হামিদ মিতুল এই প্রতিবেদককে জানান, “আমি আমার শ্বশুর খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিচয় দিয়েছি। আমার স্বামী খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু এবং দেবর আকতার হামিদ পবনের পরিচয়ও দিয়েছিলাম। এরপরও তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে।”

তিনি অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে বলেন, “অভিযুক্তরা যুবদলের।”

এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু জানান, অভিযোগটি হাতে পেয়েছেন এবং তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।

উল্লেখ্য, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বিএনপি ষষ্ঠ মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা-১ ও মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর) আসন থেকে মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে ভূমিকার জন্য ২০০৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

সেই সঙ্গে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদে তিনি সরকারদলীয় ও সপ্তম সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘদিন। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৭ দলের লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন।

২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারের আগমুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ নেতাকে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব দেন। বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলের মতামত অনুযায়ী তাকে ২০০৯ সালের ১৩ই ডিসেম্বর মহাসচিব পদে বহাল রাখা হয়। আমৃত্যু তিনি বিএনপির মহাসচিব ছিলেন।

২০১১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় খোন্দকার দেলোয়ার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

সারাবাংলা/ইউজে/এসআর

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিবার যুবদল পরিচয়ে চাঁদাবাজি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর