কুমিল্লা: ‘শিক্ষকতা পেশা: ভবিষ্যতের জন্য মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব শিক্ষক দিবস–২০২৫ উপলক্ষে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে কুমিল্লা নবাব ফয়েজুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালেয়ে মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস)-এর কুমিল্লা জেলা শাখা।
সভায় বক্তারা মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একটি আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা হচ্ছেন মূল চালিকা শক্তি। শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা, পদোন্নতি, বেতন কাঠামো ও প্রশাসনিক কাঠামোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম, সহকারি শিক্ষক রহিমুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক কাজেম আলী, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ, প্রধান শিক্ষক এ. কে. এম. আব্দুল হান্নান, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামছুল আলম, শিক্ষক প্রতিনিধি সোহেল কামরুল হোসেন ও মোহাম্মদ শওকত হোসেন, শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ জিয়াউল হক এবং প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার।
সভার সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা জেলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও শিক্ষক মো. সুলতান জসিম উদ্দিন।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষকদের এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও চার শ্রেণির পদোন্নতি, অনানুষ্ঠানিক আর্থিক উপকারভোগীদের সক্ষমতা সংরক্ষণ, শিক্ষা ও প্রশাসনিক শাখার শূন্যপদে নিয়োগ ও পদায়ন সম্পন্ন করা এবং বেতনবৈষম্য নিরসনসহ টাইম স্কেল ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রদান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক সংকট, প্রশাসনিক জটিলতা ও পদোন্নতিহীনতা শিক্ষার মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করলে শিক্ষকদের প্রশাসনিক সমস্যা সমাধান, একাডেমিক তদারকি বৃদ্ধি ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেড বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষকদের আর্থিক ও মানসিক প্রণোদনা বৃদ্ধি পাবে, যা শিক্ষা খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা শিক্ষক সমাজের ঐক্য ও সংগঠিত আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাদের মতে, মাধ্যমিক শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতি ব্যাহত হবে।