ঢাকা: বিগত নির্বাচন খারাপ করার ভূমিকায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাই এবার নির্বাচনকে ভালো করার জন্য কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী— এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সোমবার (৬ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপে সবার বক্তব্য শেষে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ইসির তত্ত্বাবধানে সব প্রার্থীকে এক মঞ্চে এনে তাদের নির্বাচনি এজেন্ডা তুলে ধরার ব্যবস্থা করব। একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে কিছু কিছু বাহিনী গেছে। পাশপাশি এর বাইরেও গত ১৬ বছরে সংস্কৃতির যে পরিবর্তন হয়ে তাতো আমরা রাতারাতি সংশোধন করতে পারি না। গত ১৬ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হয়তোবা ছিল নির্বাচনে, কিন্তু তারা কোনো ভূমিকায় ছিল। তারা তো নির্বাচনকে খারাপ করার কাজটা করেছে। অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে থেকে। এবারও হয়তো অতটা শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে না। কিন্তু নির্বাচন ভালো করার জন্য কাজ করবে। আমাদের যা যা সক্ষমতা আছে জাতীয়ভাবে, এমনকি আমরা স্কাউটকে কাজে লাগাতে পারি।’
প্রবাসীদের ভোট নিয়ে মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিটি পোস্টাল ব্যালটের ভোটে ব্যয় সাতশ টাকা। আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমাদের ধারণা ভোট অনেক আসবে। কত হবে জানি না। প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ ব্যালট পেপার ছাপিয়ে রাখব। রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা দেখে পরবর্তী ধাপে যাবো।’
আরও পড়ুন-নির্বাচন একাধিক দিনে করা সম্ভব কিনা তা ভাবতে হবে: গোলাম সামদানী
প্রবাসীদের ভোট নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ভোটাররা যদি তাদের ঠিকানা লিখতে ভুল করেন, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে এক জায়গায় আট-দশজন থাকেন, যেই ঘরের ঠিকানা নেই। বিকল্প হিসেবে পিক আপ পয়েন্ট থেকে নিতে পারেন কিনা, সেটা ভাবছি। সেসঙ্গে প্রবাসীদের ব্যালটে না ভোটসহ ১১৬টা প্রতীক থাকবে। খামে ব্যালট পাঠানো হবে, তিনি ভোট দিয়ে আবার পাঠিয়ে দেবেন। সেটা রিটার্নিং অফিসারের কাছে চলে যাবে। ভোটের দিন এ ব্যালট গণনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পর্যবেক্ষক নিবন্ধন পেতে তিনশর বেশি আবেদন করেছে। আগের সময়ে যারা ছিল সবাইকে বাদ দিয়েছি। এখন মতাদর্শ থাকতেই পারে। তিনশ আবেদন থেকে বাছাই করে ৭৩টিতে এসে দাঁড়িয়েছে।’
সীমানা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ছিলে ১০ শতাংশ ভোটারের ব্যবধানে সীমানা করা। কিন্তু বাস্তবতায় আমরা সেটা করতে পারিনি। কারণ দুইশো’র মতো আসনে কাটাছেঁড়া করতে হতো। যেখানে সম্ভব সেখানে হাত দিয়েছি। আমরা ইউনিয়ন, পৌরসভা ভাঙিনি। সিটি ভেঙেছি। উপজেলা তো ভেঙেছেই।’
আরও পড়ুন-২১ লাখ মৃত ভোটার চিহ্নিত, যারা আগে ভোট দিতেন: সিইসি
ভোটার তালিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়িবাড়ি যাওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। ১৮ বছর হলে আমি অনলাইনে ভোটার হতে পারি। তারপর শুধু অফিসে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অপব্যবহার নিয়ে মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘এটা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। আমি দুই ডজনের অধিক নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি। অর্ধেকের বেশি একই কথা বলেছে যে এআই-এর কারণে বর্তমানে নির্বাচন অবাধ হতে পারে, তবে সুষ্ঠু নয়। তারা বলছেন ৫০ শতাংশের অধিক অপপ্রচার ট্রেসই করা যায় না। বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি, মেটা তাদের পলিসি অনুযায়ী আমাদের চোখে যেটা মনে হচ্ছে সঠিক নয়, তারা এটাকে ডিসকোয়ালিফাই করছে না।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপিয় ইউনিয়ন চার মিলিয়ন ইউরোর একাট ফান্ড করেছে। ২৭৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি আমাদের সরকার কর্তৃক বাজেট আছে। যার তুলনায় ওদের ফান্ড কিছুই না। টেকনোলজিক্যাল প্লাটফরম ডেপলয় করার সক্ষমতা তাদের নেই। ইউএনডিপির সে সক্ষমতা আছে। আমরা সেটা নিচ্ছি। এ ছাড়া পুলিশ, বিটিএমসি, বিটিআরসি, গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে এক করে আমরা একটা কাঠামো দাঁড় করাচ্ছি। সেন্ট্রালি এবং গ্রাউন্ড লেবেলে। আশা করি এতে যেটা হবে তথ্যের অবাধ প্রবাহ হবে।’