Tuesday 07 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নড়িয়ার ইউএনও’র বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১:০৮

আব্দুল কাইয়ুম খান।

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খানের বিরুদ্ধে মতিউর রহমান সাগর নামে এক বিএনপি নেতার কাছ থেকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের ঘুষ আদায়ের অভিযোগ  উঠেছে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী মতিউর রহমান সাগর নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাগর ট্রেড ইন্টার ন্যাশনালের মালিক। তিনি উপজেলা ঘরিষার ইউনিয়নের লাউলানী গ্রামের বাসিন্দা।

অভিযোগের বিবরণে জানা গেছে, আব্দুল কাউয়ুম খান নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করার কিছুদিনের মধ্যে ব্যবসায়ী মতিউর রহমান সাগর ঘড়িসার ইউনিয়নের নোয়াদ্দা বাংলাবাজারে যথাযথ বিধি-বিধান অনুসরণ করে একটি ওয়াসব্লক নির্মাণ করেন। ওই কাজের বিল তুলতে গেলে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম খান ব্যবসায়ী মতিউর রহমান সাগরের কাছে অফিস খরচ বাবদ ৮% হারে টাকা দাবি করেন। এসময় মতিউর রহমান সাগর তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এতে ইউএনও আব্দুল কাউয়ুম খান ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন প্রকার আইন-কানুনের ভয় দেখিয়ে মতিউর রহমান সাগরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উচ্চস্বরে হুমকি প্রদান করেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিবরণে আরও জানা গেছে, গত ২০ আগস্ট মতিউর রহমান সাগর ব্যবসায়ীক কাজে বিদেশে অবস্থান করলে তার কর্মচারী বিল্লাল হোসেন সরকারি ওএমএস-এর চাল বিতরণ করেন। এ সময় ইউএনও আব্দুল কাউয়ুম খান ওএমএস-এর চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে মতিউর রহমান সাগরকে কারণ দার্শানো নোটিশ দেন। মতিউর রহমান সাগর ২৩ আগস্ট দেশে এসে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেন। কিন্তু এতে ইউএনও সন্তুষ্ট হননি। পরবর্তীতে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম খান এবং উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে মতিউর রহমান সাগরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই টাকা দিতে অনিহা প্রকাশ করলে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম খান ক্ষিপ্ত হয়ে ২৮ আগস্ট মতিউর রহমান সাগরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের করার জন্য একটি চিঠি ইস্যু করেন, যা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ব্যবসায়ী মতিউর রহমান সাগরের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান।

এরপর কিছুটা ভীত হয়ে মানসম্মানের কথা চিন্তা করে একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় মতিউর রহমান সাগর ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম খানের সঙ্গে দেখা করেন এবং উপজেলা পুকুরঘাটের সামনে খামে ভরে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম খানকে দুই লাখ টাকা দিয়ে আসেন। বাকি তিন লাখ টাকা আর দিতে পারবেন না বলে জানান মতিউর রহমান। কিন্তু ইউএনও এতে মানতে রাজি নন। বাকি টাকা দেওয়ার জন্য মতিউর রহমানকে চাপ দেন তিনি। দর কষাকষির পর আর এক লাখ টাকা দেওয়ার জন্য মতিউর রহমানের কাছে দাবি জানান ইউএনও। কিন্তু ওই টাকা না দেওয়ার কারণে ১১ দিন পর মতিউর রহমানের অনুপস্থিতে ৭/৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে মতিউর রহমানের গোডাউনে হানা দেন ইউএনও এবং ৩৫৫ কেজি চাল কম আছে অজুহাত দেখিয়ে মতিউর রহমানকে ৪১ হাজার ৪০৬ টাকা জরিমানা করেন এবং তার খাদ্যবান্ধব ডিলার লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেন। এ সব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী মতিউর রহমান সাগর সোমবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মতিউর রহমান সাগর বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায় বিচার কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম খান মোবাইলে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ দিয়েছে তা আমি এখনো দেখি নাই। যে অভিযোগ দিয়েছে, আপনারা তাকে জিজ্ঞাসা করেন, সে কেন অভিযোগ দিয়েছে।’

সারাবাংলা/ইআ

ইউএনও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ শরীয়তপুর

বিজ্ঞাপন

বিনা অভিজ্ঞতায় চাকরির সুযোগ
৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৫

আরো

সম্পর্কিত খবর