চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে রাস্তায় প্রাইভেটকারে গুলি করে এক ব্যবসায়ীকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। রাউজানের ওই ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাউজান সীমান্তবর্তী হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নিহত মো. আব্দুল হাকিম (৪৫) রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের পাচখাইন গ্রামের বাসিন্দা। নিজ বাড়িতে হামিম এগ্রো নামে একটি গরুর খামাার পরিচালনা করতেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকারে চড়ে আব্দুল হাকিম চট্টগ্রাম নগরীর দিকে যাচ্ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার সংযোগস্থল মদুনাঘাট সেতু পার হয় গাড়িটি। তখন বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা তিনজন দুর্বৃত্ত গাড়ির সামনে বসা তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। গুলিতে গাড়ির সামনের কাচ ফুটো হয়ে গেছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়ির ভেতরেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে দ্রুত নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকায় বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম প্রাইভেটকারে চালকের পাশে বসেছিলেন। শহরে বাসায় যাচ্ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। মদুনাঘাট সেতুর একেবারে গোড়ায় তিনটি মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা তিনজন এসে তাকে গুলি করে চলে যায়। এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।’
এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা তারেক আজিজ।
এদিকে নিহত আব্দুল হাকিম পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানিয়েছেন রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আব্দুল হাকিম বিএনপির সমর্থক ছিল। তবে সক্রিয় রাজনীতি করতো না। তবে তার পুরো পরিবার বিএনপির সমর্থক। ২০১০ সাল থেকে সে আমার সঙ্গে ছিল। তার বাবা, নানার সঙ্গেও আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক আছে। এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে কারা তাকে হত্যা করল, আমি জানি না। আমি খুনিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। গত ২৯ জুলাই রাউজানে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের ওপর হামলা ও রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনার পর পদ হারান গিয়াস কাদের।