Thursday 09 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসলামী ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৩১ | আপডেট: ৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩৯

-ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: এস আলম গ্রুপ কর্তৃক ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে অবৈধভাবে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল এবং পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে ‘সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম’-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একদল ব্যবসায়ী এ দাবি জানান। এ সময় জোরপূর্ব কদখলকৃত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম-এর সদস্য সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান। বারভিডা’র সভাপতি আবদুল হক, নিউ অটো গ্যালারির সত্ত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম আলম, শিল্প উদ্যোক্তা আল মামুন ও বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদ-এর সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আজকের (বৃহস্পতিবার) মধ্যেই ইসলামী ব্যাংক থেকে সকল অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বহিস্কার করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি তাদেরকে আজকের মধ্যে বহিস্কার না করে, তাহলে ব্যবসায়ী সমাজ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাওসহ অতিসত্বর কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে। এ সময় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে সারাদেশের মেধাবী প্রার্থীদের এ ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়ারও দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীরা বলেন, একটি বিশেষ বাহিনীকে ব্যবহার করে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করা হয়। এস আলম পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত আরোপ করে। স্পন্সর পরিচালকদের কাছে নিজেদের সম্পদ বিক্রির ফাঁদ পাতা ছাড়া কিছু নয়। এমন শর্ত কোম্পানি আইন ও সংবিধানে নেই। এটা মালিকানা কেড়ে নেয়ার শর্ত বা হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়। দিন বদল হয়েছে। এখন মালিকানা ফেরত দিতে হবে। আমরা সরকার, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি যে, প্রকৃত মালিকদের শেয়ার ফেরত দিলে ব্যাংকটি ভালো চলবে। অন্যথায় দাবি আদায়ে যা যা করা দরকার সব করা হবে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার এখনো এস আলমের মালিকানায় রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তা জব্দ করে রাখলেও কেন এ শেয়ার লিকুইডেশন করে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করছে না- তা আমাদের বোধগম্য নয়। ব্যাংকের সকল স্তরের গ্রাহক আশংকা করছে যে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক শক্তির সহায়তায় এসব শেয়ার কব্জা করে এস আলমের মত দুর্বৃত্তরা আবারও ব্যাংক দখল ও লুটপাট করবে।

সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জব্দকৃত এস আলমের সকল শেয়ার লিকুইডেশন করে ব্যাংকের দায় শোধ এবং পূর্বের পরিচালনা পরিষদের হাতে ব্যাংকের মালিকানা ফেরত দেওয়াসহ এস আলমের ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত সিকিউরিটি এবং যেসব সম্পদ আদালতের মাধ্যমে অ্যাটাচমেন্ট করা হয়েছে- তা একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বিক্রি করে ব্যাংকের দায় শোধ করার দাবি জানানো হয়।

ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, এস আলম শুধু টাকাই লুট করেননি, তিনি ব্যাংকের মূল শক্তি মানবসম্পদকে দূর্বল করে দিয়েছেন। কোনো বিজ্ঞাপন ও চাকরির পরীক্ষা ছাড়াই মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পটিয়ার পানের দোকানদার, বাড়ির কাজের বুয়া ও তার স্বামী, অটো চালক, রাজমিস্ত্রির সহকারী ও সাম্পানের রং মিস্ত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণির অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত ৮ হাজার ৩৪০ জনকে ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি শুধুমাত্র পটিয়ার এবং প্রায় সাড়ে ৭ হাজার শুধুমাত্র চট্টগ্রামের প্রার্থী। নিয়োগকৃত এসব কর্মকর্তা কর্মচারির ম্যধ্যে অনেকেই ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে ব্যাংকে যোগদান করেছে। ইতোমধ্যে অনেক ভুয়া সার্টিফিকেটধারিকে বহিস্কার করেছে ইসলামী ব্যাংক। এদের পিছনে বছরে ব্যাংকের ক্ষতি প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। সে হিসাবে ৭ বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকটি।

সারাবাংলা/আদিল/এসআর

অবৈধ নিয়োগ বাতিল ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপ পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম