ঢাকা: সংসদ সদস্যদের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
তিনি বলেন, ‘‘আপনি এমপিদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে নেন, কেউ আর এমপি হতে চাইবে না। এখন রাস্তায় বের হলে শুধু দেখবেন ‘আমি এমপি হতে চাই’ লেখা পোস্টার। পাঁচ-ছয়টা ছবি দিয়ে সবাই এমপি হতে চায়। কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা মেম্বার হতে চায় না।’’
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারবে?’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘১৭ বছর ধরে যারা বিনা ভোটে সংসদে গেছেন, তারা মনে করেন তাদের যা ইচ্ছা, তা করার অধিকার আছে। সংসদ সদস্যরা কেন গাড়ি আনবেন, কেন তাদের কথায় প্রশাসন চলবে এসব প্রশ্ন এখন তোলা দরকার। সংসদ সদস্যের সীমিত ও নির্ধারিত ক্ষমতা থাকা উচিত।‘
উচ্চকক্ষ প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উচ্চকক্ষে আসুন। তবে সিভিল সোসাইটির মাঝেও মতাদর্শগত বিভাজন রয়েছে। উচ্চকক্ষে এমন প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন, যারা দেশের স্বার্থে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করবেন। তরুণদের কণ্ঠস্বরও সেখানে পৌঁছানো উচিত, তবে তা হওয়া উচিত অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক আলোচনার মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অংশ ছিল, তখনই আমরা ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তার ৬ নম্বর পয়েন্টেই ছিল উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব। এতে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল সংসদকে আরও দায়বদ্ধ করা এবং একটি কার্যকর চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ব্যবস্থা গড়ে তোলা।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যেন নিজের দলের বিরুদ্ধেও স্বাধীনভাবে সংসদে কথা বলতে পারেন, সেই বিষয়টি আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। কার্যকর সংসদ না থাকার কারণে গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে।’
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান। উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, কমিউনিস্ট পার্টির রুহিন হোসেন প্রিন্স, নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আলীমসহ অনেকে।