ঢাকা: বাংলাদেশ মার্শাল আর্ট কনফেডারেশন আয়োজিত জাতীয় কম্বাত জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে আর কোনো বাধা থাকলো না নারায়ণগঞ্জ জেলার খুদে খেলোয়াড়দের জন্য। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে জর্জরিত বাংলাদেশ সেলফ ডিফেন্স অ্যান্ড স্পোর্টস কারাতে একাডেমির ক্ষুদে কারাতেদের অংশগ্রহণ প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও আন্তর্জাতিক কারাতে কোচ আশরাফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনসহ নানা খরচ হয়। আমাদের একাডেমির অনেক শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে সক্ষম নয়। কেউ কেউ মাসিক বেতনও দিতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো উপায় না দেখে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) আমরা কয়েকজন কোচ, ক্ষুদে কারাতে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা মিলে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম স্যারের কাছে যাই। সেখানে আমরা আর্থিক সহায়তার আবেদন জমা দিই। স্যার একটুও দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গেই অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।’
রাজধানীর সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে শনিবার ( ১১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য এই জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ থেকে মোট ২৮ জন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিল গ্রিন হেরা একাডেমির নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ক্ষুদে কারাতে খেলোয়াড় ফাইহা বিনতে ফরহাদ আবদিয়া এবং তার মা রিফাত সুলতানা।
ডিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে টেলিফোনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় আবদিয়া বলেন, ‘ডিসি আংকেল আমাকে অনেক আদর করেছেন। খেলাধুলার পাশাপাশি ভালোভাবে পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়েছেন।’
তার মা রিফাত সুলতানা বলেন, ‘ডিসি স্যারের ব্যবহার অত্যন্ত ভালো। তিনি বাচ্চাদের খুব পছন্দ করেন এবং খেলাধুলার প্রতি তার অনেক আগ্রহ আছে। এর আগেও যখন নারায়ণগঞ্জ জেলার খুদে কারাতেরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেডেল জিতেছিল, তখন ডিসি অফিসের হলরুমে তাদের দাওয়াত দিয়ে সার্টিফিকেট ও মিষ্টি দিয়ে উৎসাহিত করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তখন ডিসি স্যার বলেছিলেন—আমি যদি আগে জানতাম, তাহলে তোমাদের জন্য আরও কিছু করতাম। শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে আমার মন ভরছে না।’’
বাংলাদেশ সেলফ ডিফেন্স অ্যান্ড স্পোর্টস কারাতে একাডেমির নারী কোচ ও ব্ল্যাক বেল্টধারী রোকেয়া জাহান মীম বলেন, ‘আজ আমাদের অফিসে ডেকে আপ্যায়ন করেছেন, সবার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। আগেও ভালো খেলায় অংশগ্রহণের জন্য আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। ডিসি স্যার বলেছেন, আমরা যখন পদক নিয়ে আসি, সেটা পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলার সম্মান।’
রোকেয়া জাহান মীম আরও বলেন, ‘স্যার আমাদের আগামী প্রতিযোগিতায় ভালো ফলাফলের জন্য অনেক পরামর্শ দিয়েছেন এবং খেলাধুলার যেকোনো প্রয়োজনে সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন।’