কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুকুর থেকে অনন্যা ইসলাম সুমি ওরফে যুথি (৩০) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়রা মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত যুথি শহরের পিয়ারাতলা এলাকার মৃত বাচ্চু ইসলামের মেয়ে। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর যুথি দ্বিতীয় স্বামী নাহিদ ইসলামের সঙ্গে চৌড়হাস এলাকার থাকতেন। প্রথম সংসার একটি মেয়ে রয়েছে যুথির। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবুও সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত চলছে। এটি দুর্ঘটনা নাকি অন্যকিছু, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে হাসপাতালের পুকুরে বোরকা পরিহিত এক নারীর ভাসমান মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এ সময় তারা বিষয়টি হাসপাতাল ক্যাম্প পুলিশকে জানায়। কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে তার পরিচয় সনাক্ত হয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, ‘মেয়েটি মাদকাসক্ত ছিল। তাছাড়া শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। বাকিটা রির্পোট পাওয়ার পর বলা যাবে।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, প্রথম স্বামীর মুত্যুর পর মেয়েটি নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে তার মেয়েকে নিয়েই থাকতো। সম্প্রতি ওর মেয়েকে কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে। এটা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। বেশ কিছুদিন ধরে তাকে জেনারেল হাসপাতালের আশেপাশে দেখা যেতো।
নিহতের দ্বিতীয় স্বামী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যুথি এখন আমার সঙ্গে থাকে না। কোথায় থাকে তাও জানি না। তবে গতকাল আমাকে কল করেছিল। ফোন কলে সে জানায়, তুহিন, বিল্লু ও গন্জের নামের তিন ব্যক্তি তাকে মেরে ফেলার জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘যুথি মেয়েকে কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে। গন্জের নামে এক ব্যাক্তির কাছে তার মেয়ে আছে। এই নিয়ে কোনো ঝামেলা আছে।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসময় একটি বাটন মোবাইল ও একজোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঘটনাটি তদন্ত করছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।’