ঢাকা: বিশ্বচিত্রকলার জগতে বাংলাদেশের হয়ে গৌরব যোগ করলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চিত্রশিল্পী আব্দুর রাজ্জাক প্রধান। শিল্পকলায় তার অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মাননা ‘হিউম্যান হারমনি অ্যাওয়ার্ড–২০২৫’।
সম্প্রতি মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান ‘হিউম্যান হারমনি সম্মেলন ও সম্মাননা–২০২৫’-এ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। শান্তি, সম্প্রীতি ও মানব উন্নয়নে অবদান রাখা বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মান জানাতেই এই আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ মুথালিব। তিনি তার বক্তব্যে মানবসম্প্রীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন শিল্প ও বাণিজ্যিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটির অর্থনীতি ও পরিকল্পনা উপমন্ত্রী আহমেদ সাঈদ মুস্তাফা, সাবেক সংস্কৃতি, পর্যটন ও সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রী আনন্দ প্রসাদ পোখারেল প্রমুখ। আড়ম্বরপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এশিয়ান বিজনেস পার্টনারশিপ সামিটের নির্বাহী পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু।
আব্দুর রাজ্জাক প্রধানের এই অর্জন কেবল তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং বাংলাদেশের চিত্রকলার জগতে এক নতুন সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। বিশ্বচিত্রপটে বাংলাদেশের শিল্পের উপস্থিতি আরও জোরালো করে তুলেছেন তিনি। পুরস্কার প্রাপ্তির পর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শিল্পী রাজ্জাক প্রধান বলেন, ‘ এই পুরস্কার শুধু আমার নয়, এটি বাংলাদেশের শিল্পীদের সম্মান। আমি বিশ্বাস করি, শিল্প মানুষকে একসূত্রে বাঁধে— ধর্ম, বর্ণ বা জাতিগত ভেদাভেদ ভুলিয়ে দেয়। আমার শিল্প সেই মানবসম্প্রীতিরই ভাষা।’
এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় এক উজ্জ্বল সংযোজন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন শিল্প বোদ্ধারা। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও তার শিল্পকর্ম ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেখ হামদান প্যালেসসহ বিশ্বের নানা দেশে তার মুরাল ও চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে, যা আন্তর্জাতিক গ্যালারি ও সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছে।
উল্লেখ্য, আব্দুর রাজ্জাক প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মেধা, সৃজনশীলতা ও মৌলিক চিন্তাশক্তির মাধ্যমে নিজেকে আলাদা করে তুলেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে, ১৯৯৯ সালে তৈলচিত্রে শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার, ১৯৯৭ সালে কালি ও কলম মাধ্যমে চিত্রাঙ্কনের জন্য আমিনুল ইসলাম বৃত্তি, ১৯৯৫ সালে পেন্সিল স্কেচে নোনা মিয়া স্মৃতি পুরস্কার, ২০০৪ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃক বেস্ট ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড।