Sunday 12 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইন্টেরিম গভর্মেন্টও মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩০ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ২১:১৪

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, এই ইন্টেরিম গভর্মেন্টও আজ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে, শিক্ষাব্যবস্থার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা নিজের আখের গোছানোর কাজও করে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রোববার (১২ অক্টোবর) বিকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমাদের দেশের ছাত্র-জনতা, শিক্ষক-চিকিৎসকসহ নানান পেশার মানুষেরা তাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। কিন্তু খবর পেলাম তারা নাকি ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে গাড়ি কিনছেন। অথচ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা বললেই তাদের কাছ থেকে শুনতে হয় সরকারের টাকা নেই।’

বিজ্ঞাপন

‘আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা এ ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বসিয়েছি’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অথচ তারা আজ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছেন। তারা শিক্ষার বিপক্ষে এসে দাঁড়িয়েছেন।’

শিক্ষা কমিশন গঠন না করার সমালোচনা করে সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমাদের আশা ছিল বাংলাদেশে একটা শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে যে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়ার চতুরতা শেখ হাসিনা করে গেছেন, তা ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য একটা শিক্ষা কমিশন জরুরি ছিল।’

এনসিপির এই নেত্রী বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, পুরো দেশটাকে একটি নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। অথচ আমার শিক্ষকদের, শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার চেষ্টা করা হলো না। বুলেট দিয়ে, গুলি করে গণহত্যা চালানোর চেয়ে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা কোনো অংশে কম কিছু না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে সবচেয়ে বেশি যে কাজটি করা হয়েছে তা হলো শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করা। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বেতন-ভাতা সবক্ষেত্রে চরম অবহেলা করা হয়েছে। শিক্ষকদের মাত্র ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়া লাগবে, এটাও যদি ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের কাছে চাওয়া লাগে? তাদের অবস্থান দেখে স্পষ্ট যে, শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত করতে তাদের আন্তরিকতা কতটুকু!’

শিক্ষা উপদেষ্টার সমালোচনা করে সামান্তা শারমিন আরও বলেন, ‘বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টাকে নিয়োগের পর আমরা মনে করেছিলাম তিনি নিজে যেহেতু শিক্ষক, সেজন্য শিক্ষকদের অবহেলার জায়গাটা বুঝবেন। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর তার কর্মকাণ্ড। তার ব্যাপারে সব পক্ষের অভিযোগ তিনি কাউকে সময় দিতে চান না। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার সব উপদেষ্টাকে সবসময় অ্যাভেইলঅ্যাবল থাকতে হবে। এটাই মানুষের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু তারা নিজেদেরকে অনেক বড় কিছু মনে করেন, হয়তো তারা বড় কিছু কামিয়েছেন। এজন্য তারা আমাদের প্রান্তিক শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে রাজি হন না।’

এনসিপি শিক্ষকদের পাশে আছে এবং থাকবে জানিয়ে দলটির নেত্রী বলেন, ‘জাতীয়করণ দূরে থাক, ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া আর ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা বাড়ানো যাচ্ছে না! এ দাবি জানাতে ঢাকায় আসায় শিক্ষকদের মেরে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এটা সহ্য করা হবে না। এনসিপি শিক্ষকদের পাশে আছে, থাকবে। আপনারা আপনাদের দাবির প্রতি অবিচল থাকুন। সরকারকে এ দাবি পূরণ করতেই হবে।’

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির প্রমুখ।