Sunday 12 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাঠ্যপুস্তক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হস্তান্তর সঠিক কোনো সমাধান নয়: টিআইবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৩১

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ফাইল ছবি

ঢাকা : পাঠ্যপুস্তকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে হস্তান্তর সঠিক কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মূলত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর স্বায়ত্তশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ দীর্ঘকালের পুঞ্জীভূত সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায় অনুসন্ধানের পরিবর্তে মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার মতো অবস্থা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওপর ন্যস্ত করার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও মনে করছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

একইসঙ্গে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিতরণসহ সার্বিক কার্যক্রমে বিদ্যমান দুর্বলতাসমূহ চিহ্নিত করে স্বায়ত্তশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

এনসিটিবির বাস্তব স্বায়ত্তশাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে, এক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণের নামে কোনো অ্যাডহক উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না উল্লেখ করে আজ এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যমান আইন সংশোধন করে প্রাথমিকে স্তরের পাঠ্যবই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগ এনসিটিবিকে কেবল দুর্বলই করবে, লক্ষ্য অর্জনে গুণগত কোনো পরিবর্তন আনবে না। সুশাসনের ঘাটতি ও ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার ও প্রতিরোধের কার্যকর উপায় অনুসন্ধান করতে হবে। দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষ ও যোগসাজশে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে মূল সমস্যার সমাধান না করে পাঠ্যপুস্তক-সংক্রান্ত কাজে এনসিটিবির দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে প্রায় শূন্য থেকে শুরু করে এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণের কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই। বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে আলাদাভাবে পাঠ্যবই ছাপার এখতিয়ার অর্পণ করলে সংকট ও সমন্বয়হীনতা আরো বৃদ্ধি পাবে। অধিকন্তু তথাকথিত বিকেন্দ্রীকরণের ফলে বাস্তবায়নকারী সংস্থা দুইটি হলেও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে এই সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হবে না। বরং এক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হবে মাত্র।’

সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মান নিয়ে প্রশ্ন ও কাজের সমন্বয়হীনতার দায়ভার এককভাবে এনসিটিবির ওপর আরোপ করা আপাত দৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কী দায় এড়াতে পারে? এই প্রশ্ন রেখে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তর্দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বায়ত্তশাসনের পথে প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রতিবন্ধকতার কারণে অদক্ষতা, অনিয়ম ও পেশাগত অবক্ষয়ের শিকার এনসিটিবি কার্যকরভাবে অর্পিত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়সহ, দরপত্র প্রক্রিয়া, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণে এনসিটিবি যাতে সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্তগ্রহণের এক্তিয়ার পায়, সে ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত ব্যর্থতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণ অনুসন্ধান সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর