ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পি আর) পদ্ধতি এখনই বাস্তবায়ন করা হবে না। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে এবং জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “পি আর পদ্ধতি একটি নতুন ধারণা। এখনই এটা বাস্তবায়ন ঠিক হবে না। জনগণকে আগে জানাতে হবে, বুঝাতে হবে—তারপর বাস্তবায়নের প্রস্ততি নিতে হবে। এবারের নির্বাচনের পর গঠিত পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব ধরনের ষড়যন্ত্রের ঊর্ধ্বে উঠে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। এজন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। ১৭ তারিখে আমরা আশা করছি, যেসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন, সেখানে সাক্ষর হবে। যেগুলোতে মতপার্থক্য আছে, সেগুলো জনগণের কাছে নির্বাচনের মাধ্যমে ছেড়ে দিতে হবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করা বিষয়টি যারা দ্রুত নির্বাচন চান তাদের কাছে বোধগম্য নয়। এটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে—সেখানে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে, পরবর্তী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনীতিতে একধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলিয়ে দিতে চায়।
“আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যেতে চাই না। আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই,”—বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি আরও যোগ করেন, “দেশে গত ১৫ বছর ধরে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ছিল। একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্ত হয়েছি। এখন দেশের মানুষ আশা করছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠন করবে। এজন্য সারাদেশে আমাদের সমর্থকদের অংশগ্রহণ জরুরি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আগামী নির্বাচন হবে জনগণের রায়ের প্রকৃত প্রতিফলন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই বোঝা যাবে—আমরা সত্যিই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করতে পেরেছি কিনা।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এ বি এম আব্দুস সাত্তার (একান্ত সচিব, বিএনপি চেয়ারপারসন), তরুণ দে (মহাসচিব, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট), মাইকেল গমেজ (প্রেসিডেন্ট, খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন)। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাদার আলবার্ট রোজারিও, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। সঞ্চালনা করেন জনাব অনিল লিও কস্তা, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরাম-এর পক্ষ থেকে।
সভায় বক্তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি, সংখ্যালঘু অধিকার ও আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সকল ধর্ম-বর্ণের সহাবস্থানের একটি দেশ।