Monday 13 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে জনমত গঠন করতে হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:১২

জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে

ঢাকা: দেশের নারী ও কন্যা শিশুর জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে জনমত গঠন করতে হবে। অনুমোদন দিতে হবে বেশ সংশিষ্ট আইনও।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্ল্যাটফর্মের সদস্য সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

সম্মেলনে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশন-২০২৪ এর প্রধান ও বিলস নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, কমিশন সদস্য অ্যাডভোকেট মো. নাসিম, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা বেগম ও আওয়াজ ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন ও কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৪- খসড়া আইন পাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। পক্ষান্তরে সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও কন্যা শিশুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা আরও বেড়েই চলেছে।

তারা জানান, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)- এর তথ্য মতে এ বছর প্রথম ৯ মাসে ৫৭৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ২৯৫ জনের বয়স ১৮ বছর বা তার কম। বিলস এর সংবাদপত্রের জরিপ থেকে জানা যায়, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৬ জন নারী কর্মী হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। এ সময় গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ১৩টি।

জেন্ডার প্লাটফর্ম মনে করে, যথাযথ আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা না হলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। বিলসেএর পক্ষ থেকে তৈরি পোশাক খাতের অভিযোগ কমিটির বেস্ট প্র্যাক্টিস ও কমিটিগুলোর কার্যকারিতা বিশ্লেষণে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে হয়। এতে দেখা যায়, কারখানার কর্মী ও মিড লেভেল ম্যানেজমেন্ট এর জন্য লিঙ্গ-ভিত্তিক হয়রানি ও সহিংসতাবিষয়ক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ, কারখানায় শূন্য সহনশীল হয়রানি নীতি প্রবর্তন, ট্রেড ইউনিয়নের মতামতের গুরুত্ব দিয়ে অভিযোগ কমিটির সদস্য নির্বাচন এবং কমিটির সদস্যগণের মাধ্যমে নিয়োগকারী ও কর্মীদের কাউন্সিলিং কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-

  • কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসনবিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনের জন্য চলমান কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে অনুসমর্থন প্রদান এবং এর কার্যকরি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা;
  • যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনসাধারণের মতামতের জন্য প্রকাশিত ‘কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন’টি দ্রুত চূড়ান্ত করে গেজেট ঘোষণা করা;
  • কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে প্রদানকৃত উচ্চ আদালতের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন;
  • যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করা;
  • বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর সংশোধনীতে (১ সেপ্টেম্বর ২০২২ প্রকাশিত গেজেট) উল্লেখিত নারীর প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ক এবং এই বিধির ৩৬১ক(২)’এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া উচ্চ আদালতের প্রদানকৃত নির্দেশনা-এর ভিত্তিতে করা;
  • সার্বিকভাবে নারী অধিকার ও সুরক্ষার প্রশ্নে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া;
  • নারী বান্ধব, বৈষম্যহীন শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন করা; এবং
  •  নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করে অতিদ্রুত বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রকাশ করা।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই
বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার বিশ্ব মান দিবস
১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৪৯

আরো

সম্পর্কিত খবর