ফরিদপুর: সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার করা কঠিন কাজ। একজন ভালো বিচারক হতে হলে বিনয়ী ও ধৈর্যশীল হতে হবে। পাশাপাশি উভয়ের বক্তব্য বিচক্ষণতার সঙ্গে শুনে ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিচার কাজ করতে হবে।’
এ বিষয়ে আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘ভালো আইনজীবী হতে হলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। পারিশ্রমিকের দিকে তাকিয়ে না থেকে, ন্যায়বিচারের জন্য আপনারাও অনেক ত্যাগ স্বীকার করে থাকেন। যে কারণে ভালো বিচার করা সম্ভব হয়।’ তবে কোনো উপায়ে মিথ্যা সাক্ষীদের সহায়তা না করার অনুরোধ করেন তিনি।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে উকিল বারের সম্মেলন কক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার বিষয়টি করোনা মহামারীর মতো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। এ ধরনের অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আপনারাই সিদ্ধান্ত নিবেন কি করবেন? তবে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যে চরম অপরাধ, এটা আপনাদের বিচারের মাধ্যমে তাদের জন্য যেন একটা মেসেজ হয়ে থাকে।
ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. খন্দকর লুৎফর রহমান পিলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দার, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারুক ইকবাল, অ্যাড. মানিক কুমার মজুমদার, অ্যাড. এ.এফ. এম অলিওর, অ্যাড. বিশ্বজিৎ গাঙ্গুলী, অ্যাড. মোঃ ওহিদুজ্জামান, অ্যাড. এওএম খালিদ, অ্যাড. গোলাম রব্বানী ভুইয়া রতন, অ্যাড. আলী আশরাফ নান্নু, অ্যাড. শাহজাহান মিয়া প্রমুখ।
আইনজীবীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, যে ১৭টি কোতয়ালি কোর্টে কোতয়ালরা বসতেন। তার মধ্যে ফরিদপুর একটি। জেলার নয়টা থানার চারটি থানার মামলা কার্যক্রম জেলা আদালতে করা হয়। জেলা আদালতে জায়গা সংকুলন না হওয়ায় বাকী পাঁচটি থানার মামলার বিচার কার্যক্রম ভাঙ্গা চৌকি কোর্টে পরিচালিত হয়। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ফরিদপুর কোর্টে এখন পর্যাপ্ত বিচারক থাকায় সালথা, নগরকান্দা, সদরপুর, চরভদ্রাসন উপজেলার মামলাগুলো স্থানন্তর করার অনুরোধ জানান তারা।
১৮৭৫ সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর বারের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধান অতিথি বিচারপতি মো. রেজাউল হাসানের চেষ্টায় নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ও ল্যান্ড সার্ভের আদালতটি চীফ জুডিশিয়াল ভবনে স্থানন্তর করে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আইনজীবীরা।
পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুরের মর্যাদার কারণে ভাঙ্গা চৌকি আদালতের কাজগুলো আবার ফরিদপুর জেলা কোর্টের জুডিডিকশনের অধীনে আনার দাবি জানান তারা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জসিম উদ্দিন মৃধা। এ সময় জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।