ঢাকা: মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে ‘লং মার্চ টু সচিবালয়‘ কর্মসূচি শহিদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে সরকারকে সময় দিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ের দিকে যাত্রা করার কথা থাকলেও তা আপাতত না করে এ সিদ্ধান্ত জানান তারা।
জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা লং মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি না, তবে তা এখনই হচ্ছে না। প্রশাসন এবং হাসনাত আবদুল্লাহ (জাতীয় নাগরিক পার্টির-এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক) আমাদেরকে লং মার্চ কর্মসূচি না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের দাবি মেনে নিক। তারা প্রজ্ঞাপন যখন খুশি দিতে পারে। তবে তারা যদি মিডিয়ার সামনে ব্রিফ করে ঘোষণা দেয় যে আমাদের তিনটি দাবি মেনে নিয়েছেন, তাহলে আমরা সচিবালয়ের দিকে যাব না।’
তিনি জানান, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করাদম দাবি নিয়ে ‘দর কাশাকশির’ সুযোগ নেই।
জোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও এনটিআরসিএ সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম-বিটিএফের সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ্ রাজু বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন যতক্ষণ জারি না হবে, ততক্ষণ রাজপথ ছেড়ে যাবো না।’
প্রসঙ্গত, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে শিক্ষক-কর্মচারীরা মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান করছেন। সারাদেশেও সমমনা শিক্ষক-কর্মচারীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করছেন।
এর আগে গত রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
দুপুরে পুলিশের অনুরোধে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু, শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেস ক্লাবের সামনেই অবস্থান ধরে রাখেন। এরপর পুলিশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে চলে যেতে বলে। কিন্তু শিক্ষকদের একটা অংশ তা মানতে রাজি হয়নি। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলতে থাকে। এক পর্যায় পুলিশ পর পর বেশ কিছু সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে ও লাঠিচার্জ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেয়। প্রেস ক্লাবের সামনে জলকামানও আনা হয়।
এদিকে শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।