বগুড়া: বগুড়া শহরে রং কোড পদ্ধতি চালু হলে কমে আসবে যানজট। দীর্ঘদিনের যানজট নিরসনে ব্যতিক্রমী এমন ঋদ্যোগ নিয়েছে বগুড়া পৌরসভা। এবার থেকে শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা দুই রঙে ভাগ করা হবে। একদিন চলবে লাল রঙের, পরের দিন সবুজ। এমন নিময় চালু হলে দীর্ঘদিনের যানজট অনেকটা কমে আসবে। ফলে যাতয়াতে সময় কম লাগবে এবং নির্বিঘ্নে গন্তব্যস্থলে পৌঁছা যাবে।
বগুড়া পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরে বর্তমানে ৫০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করছে। এসব যানবাহন শৃঙ্খলায় আনতে মালিকদের ভোটার আইডি সংগ্রহ করে বিনা খরচে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু করেছে পৌরসভা। তবে এই সুবিধা কেবল পৌর এলাকার চালক ও মালিকদের জন্য সীমিত থাকবে। বাইরের গাড়িগুলোর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এদিকে চালক ও গ্যারেজ মালিকদের মধ্যে এমন উদ্যোগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, একদিন গাড়ি বন্ধ থাকলে জীবিকার চাপ বাড়বে।
গ্যারেজ মালিকরা বলছেন, যদি একজন মালিকের নামে একটি গাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে একাধিক গাড়ির মালিকদের জন্য এটি কঠিন হবে।
জানা যায়, সিটি করপোরেশন ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে বগুড়া শহরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও অন্যান্য যানবাহনের চালকরা। যে কারণে তীব্র যানজটের কবলে নাকাল বগুড়াবাসী। ভয়াবহ যানজট যেন কিছুতে থামছে না। অবৈধ ইজিবাইক, মোটা চাকার অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের দৌরাত্মে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। ১০ মিনিটের রাস্তা পোঁছাতে সময় লেগে যাচ্ছে আধাঘণ্টা। এতে করে সিমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নানা কাজে শহরে আসা কয়েক লাখ মানুষের। পৌরসভার এই উদ্যোগ বাস্তাবায়ন হলে শহরবাসী যানজটের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
স্থানীয় রিকশাচালকরা জানান, রং কোড পদ্ধতি চালু হলে যানজটের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনাও কমবে। এতে তাদেরই সুবিধা হবে।
বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান জানান, রং অনুযায়ী একদিন পরপর গাড়ি চললে শহরে অর্ধেক যান কমে যাবে। এতে অবশ্যই সুফল আসবে। বগুড়া পৌরসভা ও জেলা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে শহরে যানজট নিরসনে কাজ করা হচ্ছে।
বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহজাহান আলম রিপন জানান, ‘বগুড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা শহর হলেও এর আয়তন সীমিত। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসায় যানবাহনের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এই সমস্যা কমাতে আমরা রং কোড পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে পৌর এলাকার সাড়ে আট হাজারেরও বেশি অটোচালকের আইডি কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব যানকে দুই রঙে ভাগ করা হবে। একদিন লাল, পরদিন সবুজ। এতে শহরে চলাচলরত গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে।’
বগুড়া পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ জানান, এখন কেবল পৌরসভার বাসিন্দারাই রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা পাচ্ছেন। বাইরের চালকদের বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।