ঢাকা: রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে সিআইডি। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের বিচারকার্য শুরু করার আদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) আদালতে এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দীন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আসামিদেরকে চিহ্নিত করে মাত্র ৫ মাসেরও কম সময়ে তদন্ত সমাপ্ত করে সিআইডি। আজ শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮৬ জন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে বিচারের নিমিত্তে সিআইডি কর্তৃক প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সেই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য শুরু করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জন ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত ২৭ মার্চ রমনা থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে সিআইডি।’
জসীম উদ্দীন খান বলেন, ‘‘বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামীয় একটি অনলাইন প্লাটফর্ম জুম এর মাধ্যমে মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দেশ ও বিদেশ থেকে অনেকেই অংশগ্রহণ করেন। সিআইডি প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল উপাত্ত ও ভয়েস রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখতে পায়, ওই সভায় বর্তমান বৈধ সরকারকে উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার ঘোষণাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে এবং সে প্রেক্ষিতে আদালতের কাছে অভিযোগ দায়েরের লক্ষ্যে অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআইডিকে এই ক্ষমতা দেয়। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত হতে স্বল্পতম সময়ে সিআইডি আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠালে সেখানে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেকেই এই রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই মামলায় সারাদেশের বিভিন্ন জেলখানায় অন্যান্য মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সিআইডি আদালতকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে মোট ৯১ জনের গ্রেফতার নিশ্চিত করে। গ্রেফতারদের ৯১ জন ছাড়া বাকি ১৯৫ জন অভিযুক্ত আসামিরা বিভিন্নভাবে পলাতক রয়েছে। আজ শুনানিতে প্রধান আসামিসহ বেশিরভাগ অনুপস্থিত থাকায় আদালত কর্তৃক জাতীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারিক আদালতে বিচারকার্য পরিচালিত হওয়ার আদেশ দেন।’