রাজবাড়ী: ‘সাদা ছড়ির আধুনিকায়ন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়ন’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের আয়োজনে বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ই অক্টোবর) দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা আক্তার।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মানসুমা তাবাসুম, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালট্যান্ট (ফিজিওথেরাপি) ডা: নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ, সদর হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসার মো. বোরহান উদ্দিন হাওলাদার, রাজবাড়ী জেলা অন্ধ কল্যাণের সভাপতি আবু বক্কার, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র জাহিদুল ইসলাম ও ছাত্রী সপ্না আক্তার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা নাদিয়া সুলতানা।
আলোচনা সভায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের যে ডিজিটাল সাদাছড়ি দেওয়া হয়েছে সেগুলো কিছুদিন ব্যাবহার করার পর সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক সময় অটোমেটিক ভাইব্রেশন করে। এতে আমাদের চলতে সমস্যা হয়। সরকারের নিকট অনুরোধ থাকবে একটু উন্নতমানের ডিজিটাল সাদাছড়ি যেন দেওয়া হয়।’
কিছু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের যে ডিজিটাল সাদাছড়ি দেওয়া হয় সেগুলো একটু উন্নত হলে ভালো হয়। এখন অধিকাংশ লোকের কাছে স্মার্ট মোবাইল রয়েছে। যদি সাদাছড়িতে আলাদা ডিভাইস লাগানো থাকে যে ডিভাইসে বাংলা ভাষা থাকবে, তাহলে মোবাইলের সঙ্গে কানেক্ট করলে সামনে কি আছে সেটা আমাদেরকে জানিয়ে দেবে। যাদের স্মার্ট মোবাইল নেই তাদের ওই ডিজিটাল ছড়িতেও স্পিকার যুক্ত ডিভাইস লাগানো থাকলে সেটাতেও আমরা জানতে পারবো সামনে কি আছে। আমাদের কথা ভেবে এমন ডিভাইস যুক্ত সাদাছড়ি পেলে বা তৈরি করলে আমরা আরো ভালোভাবে চলতে পারব।’
জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, ‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আমাদের সমাজের অংশ। সাদাছড়ি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের চোখ। তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সরকারসহ আমাদের সকলের দায়িত্ব। সবার মধ্যে কোনো না কোনো প্রতিভা আছে। যারা সাদাছড়ি ব্যবহার করেন, তাদের প্রজ্ঞায় তারা বিশ্বকে মনের অন্তরে দেখেন। নিরাপদে সড়কে ও অন্যান্য স্থানে চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতীক হিসেবে সাদাছড়ির ব্যবহার হয়ে থাকে। এখন আর কেউ পিছিয়ে নেই। আমরা সবাইকে নিয়ে সামনে যেতে হবে। সরকার আপনাদের জন্য কাজ করছেন। আমরা সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবো।’
আলোচনা সভা শেষে চার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মধ্যে সাদাছড়ি বিতরণ করা হয়।