ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ আগামী ১৭ অক্টোবর সই করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি জানান, বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত সংযুক্তি) রেখেই সনদে সই করবে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে—এটাই আমাদের অবস্থান। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হলে তাতে আমাদের আপত্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নোট অব ডিসেন্ট খুবই সীমিত কিছু বিষয়ে। এগুলো যদি গণভোটে আসে, তাহলে সেটি অসংখ্য প্রশ্নের সংকলনে পরিণত হবে। তবে কিছু রাজনৈতিক দলের সই নিয়ে আপত্তি থাকায় এ জরুরি বৈঠকের প্রয়োজন হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের সব অর্গানের মধ্যে যেন ভারসাম্য থাকে, সেটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে কোনো অসামঞ্জস্য তৈরি হোক। আপনার সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকা জরুরি।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা কোনো অস্থিতিশীলতার মধ্যে যেতে চাই না। পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা সুযোগ নেওয়ার অপেক্ষায় আছে। তাই আমাদের এখনই নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আপনার প্রতি আমাদের সমর্থন কন্ডিশনাল (শর্তসাপেক্ষ)। এটি সীমাহীন নয়। আমরা চাই আপনার নেতৃত্বে একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক—এটাই আমাদের সীমারেখা।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সচিবালয়ে নিয়োগ ও বদলির বিষয়ে যে মন্ত্রিপরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেটি কোনো প্রথা বা নিয়ম নয়। এতে একটি প্রশাসনিক রাজত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা এতে গভীর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।’
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমাদের অতিরিক্ত বিপ্লবী হলে চলবে না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং বিচারব্যবস্থার বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমদের ভাষায়, ‘জুলাই জাতীয় সনদ এখন বাস্তবায়নের পথে। এখানে কিছু অনৈক্য থাকলেও সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা আশা করি, এই সনদই হবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির ভিত্তিপ্রস্তর।’