Thursday 16 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আটক সেনা কর্মকর্তাদের বেসামরিক আদালতে হাজিরের আহ্বান জাতিসংঘের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩৩ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০৯

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তাদের দ্রুত বেসামরিক আদালতে হাজির করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বিচারপ্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কমিশনের মুখপাত্র রাভিনা সামদানি বলেন, ‘গত সরকারের আমলে ঘটা গুরুতর অপরাধ সংঘটনে জড়িত হিসাবে অভিযুক্ত এক ডজনের বেশি কর্মকর্তাকে আটকের কথা শনিবার (১১ অক্টোবর) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আটক কর্মকর্তাদেরকে সেনাবাহিনী কর্তৃক শিগগির যথাযথ বেসামরিক আদালতে হাজির করাটা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ফৌজদারি বিচারকাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর এ আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী মতাবলম্বীদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ী বলে অভিযোগ আনা তিন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর সেনাবাহিনীর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে বর্তমানে কর্মরত ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পরদিন ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে, সেনা সদস্যদের বিচার সেনা আইন না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে হবে এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন দাবি জানায়, অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার আইসিটি আইনে নয়, বরং সেনা আইন অনুসারে করা হোক।

একই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-ও এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা বলেন, সেনা সদস্যদের জন্য বিশেষ কারাগার ঘোষণা ও তাদের বিচারে আলাদা ব্যবস্থা ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র রাভিনা সামদানি বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গুম নিয়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হলো। এটা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনে যেভাবে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, সেভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও নিরপেক্ষ বিচারের সবচেয়ে যোগ্য মানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। এসব সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’

সামদানি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে প্রাণক্ষয়ী বিক্ষোভের ওপর আমাদের অনুসন্ধান প্রতিবেদনের একটি প্রধান সুপারিশ ছিল—যারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত, তাদেরকে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে জবাবদিহির আওতায় আনা।’

তিনি আরও বলেন, অন্তবর্তী সরকারের উচিত ঝুলে থাকা বিপুল সংখ্যক মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা, যাতে প্রতিটি মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া ও নিরপেক্ষ সমাধান নিশ্চিত হয়।

তার মতে, ‘যারা নির্বিচারে আটক রয়েছেন, বিশেষ করে গুম থেকে ফেরা ব্যক্তি, সাংবাদিক বা পূর্ববর্তী সরকারের সমর্থক হিসেবে ধরা পড়া ব্যক্তিরা—তাদের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।’

সবশেষে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ডের দাবি না তোলার এবং বিচার কার্যক্রম যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুসারে পরিচালিত হয়।

বিজ্ঞাপন

ঢাবির চারুকলায় শরৎ উৎসব উদযাপন
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২২:১৪

আরো

সম্পর্কিত খবর