ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই ফেব্রুয়ারি মাস অতিক্রম করা যাবে না। এই সময়ের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে— অন্যথায় দেশের জনগণ তা সহ্য করবে না।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ পিপলস ফোরামের উদ্যোগে “অনির্বাচিত সরকার নয়, নির্বাচিত সরকার চাই” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এই সরকার ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আমি তাদের সমালোচনা করতে চাই না। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের অর্থই হলো— মানুষ গণতন্ত্র চায়। যদি এই সরকার সেটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র, দেশ এবং অভ্যুত্থান— তিনটিরই ক্ষতি হবে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর মাত্র তিন মাসের মধ্যে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ নির্বাচন পরিচালনা করে দেশকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনেন।
“এটি প্রমাণ করে, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা সম্ভব— শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেই,” যোগ করেন তিনি।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন, “ডিসেম্বরেও যদি নির্বাচন সম্ভব হয়, সেটি বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ফেব্রুয়ারির পর নয়। দেশের মানুষ কোনো টালবাহানা বা বিলম্ব মেনে নেবে না।”
ভারতের প্রতি তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন— এটি এক বিরল দৃষ্টান্ত। গণতন্ত্র ধ্বংসকারী, লুটপাটকারী একজন নেত্রীকে আশ্রয় দেওয়া বিশ্বের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।”
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে। গণতন্ত্রের প্রশ্নে এই জাতি কখনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। তাই সরকারকে বুঝতে হবে— সময় বেশি নেওয়া ঠিক হবে না।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি নির্বাচনের প্রশ্নে দ্বিধা বা বিলম্ব ঘটে, তাহলে একদিন এই সরকারকেই ইতিহাসে জবাবদিহি করতে হবে।”
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে দুদু বলেন, “গণহত্যার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চান, লুটপাটের অর্থ ফেরত দিন। বিচার না হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি টিকে থাকবে না।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পিপলস ফোরামের সভাপতি মাইন উদ্দিন মজুমদার। বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদের সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, ডেমোক্র্যাটিক লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব আলম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টির চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমানসহ অন্যান্য নেতারা।