Thursday 16 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিইপিজেডে আগুনের তীব্রতা বাড়ছে, যোগ দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও

স্পেশাল‌ করেসপন্ডেন্ট
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৫৯ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:০১

পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) পোশাক কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা আরও বাড়ছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভবনে। এর ফলে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আশপাশের ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি যে, আশপাশে লোকজনের অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারখানাটিতে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং সিইপিজেডের সেনাবাহিনীর টিমও।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় আগুন লাগে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-৩ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ২৫ শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার

চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে সিইপিজেডের ওই কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। আটতলা ভবনটির অষ্টম তলায় প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর সেই আগুন সপ্তম ও ষষ্ঠ তলায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড, আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশন থেকে প্রথমে ৮টি ইউনিটের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। আধাঘণ্টার মধ্যে আরও ৮টি ইউনিট কাজে যোগ দেয়। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি ইউনিটসহ মোট ১৭টি ইউনিট এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শুরু থেকেই সিইপিজেডে সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত টিম ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নৌবাহিনীর ৫টি ইউনিট এবং পরবর্তীতে বিমানবাহিনীর একটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে আগুন কবলিত ভবনটির চারপাশ ঘিরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। অহেতুক লোকজন যাতে ভিড় করতে না পারে, সেই চেষ্টা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার চেষ্টায়ও তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। বরং আগুন এখন একেবারে নিচতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। আগুনের তীব্রতা ক্রমশঃ বাড়ছে।

‘আমরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, ততক্ষণে আগুন ষষ্ঠতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের টিম পঞ্চম তলা পর্যন্ত গিয়ে আর ওপরে ওঠার স্পেস পায়নি। আমরা অন্তত ২৫ জন শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এরপর ভবনের চারপাশ ঘিরে পানি ছিটালেও আগুন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিশেষ করে ভবনের উত্তরদিক থেকে ক্রমশঃ আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি যে আমাদের কাছে যেতে বেগ পেতে হচ্ছে।’

এদিকে আগুনের তীব্র তাপে ও ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে দেখা গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, আগুন ছড়িয়ে পড়ায় পুরো কারখানা ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভবনের আশপাশে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন আছে। সেখান থেকে আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা কারখানাটির একাধিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ওই কারখানায় মূলত চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত তোয়ালে ও অ্যাপ্রোন জাতীয় পোশাক তৈরি করা হয়। কারখানার নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় তাদের মূল্যবান সব মেশিনারিজ আছে। এসব মেশিনারিজের একেকটির দাম ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, কারখানায় প্রায় ৮০০ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। আগুন লাগার পর দ্রুততার সঙ্গে প্রায় সকলেই বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এখনো পর্যন্ত কেউ ভেতরে আটকে থাকার কিংবা প্রাণহানির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সারাবাংলা/আরডি/এইচআই
বিজ্ঞাপন

রাকসুতে ভোট পড়েছে ৬৯.৮৩ শতাংশ
১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৫৩

আরো