Saturday 18 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাকসুতে বিজয়ীদের সমর্থন ও অভিনন্দন জানাল ছাত্রদল-বাম-স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

রাবি করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৫৯ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:০৩

রাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদসহ ২৩টি পদের মধ্যে ২০টিতে জয় লাভ করেছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। এ ছাড়া সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ৫ জনের ভিতরে ৩ জন ও হল সংসদে ২৫৫ পদের ২৩৪টিতেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। এই বিজয়ের পর নবনির্বাচিত প্রার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ নিজ আইডি থেকে পোস্টের মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন ছাত্রদল-বাম-স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রাকসু নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দনবার্তা দিয়ে নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানান তারা। কেউ কেউ এই ফলাফলকে ‘ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের রায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যরা রাকসুর নবনির্বাচিত পরিষদের কাছে শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজয়ী সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, রাকসু নির্বাচনে আমাদের প্রতি ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন কিংবা দেননি—সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা। বিজয়ী সকল প্রার্থীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা। আমরা বিশ্বাস করি, মতের পার্থক্য থাকলেও আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন—একটি নিরাপদ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শিক্ষার্থী-বান্ধব আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠন।

জিএস পদপ্রার্থী নাফিউল জীবন লিখেছেন, রাকসু নির্বাচনে আমাদের প্রতি ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন কিংবা দেননি—সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা। নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের প্রত্যেকটি প্রচেষ্টা ও সমর্থন আমাদের জন্য ছিল অনুপ্রেরণার উৎস। এই নির্বাচন ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য ও অংশগ্রহণের প্রতীক। বিজয়ী সকল প্রার্থীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা। আমরা বিশ্বাস করি, মতের পার্থক্য থাকলেও আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন—একটি নিরাপদ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শিক্ষার্থী-বান্ধব আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গঠন।

একইসঙ্গে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, শিক্ষার্থীদের রায়ই চূড়ান্ত। সকলের এত বেশি ভালোবাসা পেয়েছি যা অকল্পনীয়। আপনাদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। আপনাদের ভালোবাসার প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি ছিলাম, আছি এবং থাকব।

শিক্ষার্থীদের রায়কে সম্মান জানিয়ে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল লিখেছেন, রাকসুতে লড়াই ব্যতিত আমাদের কোনো পুঁজি ছিল না। লড়াই-সংগ্রামকে সম্মান জানিয়েই আপনারা ভোট দিয়েছেন। আপনাদের সমর্থনে আমাদের কণ্ঠস্বর জারি থাকবে। শিক্ষার্থীদের রায়কে সম্মান জানাই। এবার প্রতিবছর রাকসু নিশ্চিত করতে হবে।

একই প্যানেলের এজিএস প্রার্থী নাসিম সরকার লিখেছেন, অমুক প্যানেল থেকে দাঁড়াইছে তমুক কলাগাছ তবুও জিতে গেছে! এইটা কোনো রাজনৈতিক আলাপ না। অমুক প্যানেলের মতো আপনার প্যানেল দেওয়ার মতো বাস্তবতা কেনো নাই সেগুলো বিশ্লেষণ করেন। এবং এইসব ফাও আলাপ বাদ দিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র শিবিরের জয় এর বিষয়ে তাদের ঐতিহাসিক বিকাশ, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরিস্থিতির মূর্ত অবস্থার মূর্ত বিশ্লেষণ করুন। যদিও এসব নির্বাচনে কোনো গণতান্ত্রিক উপাদান নাই, যা বুর্জোয়া গণতান্ত্রিকতাকে সামনে এগিয়ে নিতে পারে। বড় জোর মোদির ভারত, এরদোগানের তুরস্কের মত সংসদীয় ফ্যাসিবাদের বিকাশেই তা শর্ত যোগাবে। তারপরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী যাদের নির্বাচিত করেছেন তাদের রায়কে সম্মান জানাই এবং বিজয়ীদের অভিনন্দন!

রাকসুর ইতিহাসের একমাত্র নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান লিখেছেন, অনেকেই আমাকে বলছেন যে ১৮ জন ভিপি প্রার্থীর মধ্যে আমি অন্তত ৩য় পজিশনে আছি বা সাহস দেখিয়েছি, এটিই অনেক বড় বিষয়। এখানে আমার নিজেকে নিয়ে ভেরি অনেস্ট অ্যাসেসমেন্ট যে, বিপুল সংখ্যক মানুষ আমাকে পছন্দ করেছে। কিন্তু ভিপির জন্য হয়তো অনেকেই আমাকে ফিট মনে করেননি। ফলে সমগ্র প্রচারণাকালীন পর্বে আমি একবারের জন্যও সিনেটের নাম উচ্চারণ না করলেও সিনেটের জন্য খুঁজতে গিয়ে আমাকে ২ হাজারের বেশি মানুষ ভোট দিয়ে এসেছে। এ জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।

বিজয়ীদের মোবারকবাদ জানিয়ে স্বতন্ত্র মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রার্থী ফাহির আমিন লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, রাকসু বাস্তবায়িত হয়েছে। যারা আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন, তাদের প্রতি সম্মান জানাই। যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের মোবারকবাদ। আগামীর ক্যাম্পাস আরও সুন্দর হোক আপনাদের কাজের মধ্য দিয়ে।

স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী মো. সজিবুর রহমান লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, রাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র এজিএস পদপ্রার্থী হিসেবে আমি ২৯০৭ জনের ভালোবাসায় ৩য় পজিশনে। আমার শরীর ছাড়া রাকসুতে কোনো কিছুই সহযোগিতা করেনি। যারা আমার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার যে লড়াই শুরু করেছি, সে লড়াই জারি থাকবে।

পরাজয় মেনে নিয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কাফি লিখেন, আমি কেন্দ্রীয় সংসদে সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ২য় স্থান অর্জন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি পরাজয় মেনে নিয়েছি। নির্বাচিত সংস্কৃতি সম্পাদককে ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছি। ৩য় স্থান অর্জনকারীরে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছি, বাকিদের সাথে দেখা হলে আবার আড্ডা হবে ঠিক আগের মতো। আমার কোনো দুঃখবোধ নেই। তিন হাজার মানুষ আমার উপর আস্থা রেখেছে। আমি তাদের প্রতি অগাধ অজস্র কৃতজ্ঞতা জানাই।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর