Sunday 19 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগে গণভোট পরে জাতীয় নির্বাচন: গোলাম পরওয়ার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:০৯ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৫৮

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সমমনা আটটি দলের সংবাদ সম্মেলন।

ঢাকা: জুলাই জাতীয় সনদে সবাই সই করার পর কেন আন্দোলন এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই সনদের যেসব সংস্কারের বিষয়গুলোতে আমরা একমত হয়েছি, সনদে সইয়ের মধ্যে দিয়ে একমত পোষণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন কাজ বাকী হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা। আর এটাকে আইনি ভিত্তি দিতে একটি গণভোটের আয়োজন করতে হবে। দুইটা জায়গা একটা হলো আদেশ কখন হবে, আর গণভোট কখন হবে। এই দুইটা জুলাই সনদে লিখিত নেই। অনেকে প্রশ্ন করছেন কবে আদেশ জারি হবে, কবে গণভোট হবে। যেটা এখনো হয়নি। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এবং সরকারেরও প্রধান উনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমিশনও একমত হয়েছেন। এই দুটি প্রশ্নে সংস্কার প্রস্তাবগুলোকে সন্নিবেশিত করে অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘অনেকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন কনস্টিটিউশনাল অর্ডারসহ নানান অর্ডারের চিন্তা হয়েছিল কিন্তু লিগ্যাল এক্সপার্টরা বলেছেন জুলাই সনদ আদেশ একটা জারি করতে হবে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে সেটা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিয়ে এটার আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তারপর জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।’

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সমমনা আটটি দলের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘একই দিনে গণভোটের প্রস্তাব দেওয়ায় আমরা এটার সঙ্গে দ্বিমত করছি। একই দিনে দুটি ভোট হলে অল্প সময়ের মধ্যে একজন ভোটার দুই জায়গায় ভোট দেবে এতে অনেক জটিলতা আছে। সনদের বিষয়ে হা না, আবার প্রতিকে ভোট দেবে। টাইমে কাভার করতে পারবে না। অনেক ভোটার ভোট দেওয়া থেকে বাইরে থেকে যেতে পারে। আরও একটি সমস্যা হলো যে জুলাই সনদে যেসব সংস্কার প্রস্তাব যাচ্ছে একজন ভোটার যদি বুঝতে না পারে হা জিতলো না-না জিতলো। কোন কোন সংস্কারে জাতি হা বললো, এটাতো ভোটারকে বুঝতে হবে। তারপরে না ভোট দেবে। একই দিনে যদি গণভোট আর জাতীয় নির্বাচনের ভোট হয় তাহলে ফলাফল না জেনেই ভোট দিতে হবে। এ কারণে আমরা বলেছি যে একই দিনে ভোট হলে জাতি ধুম্রজালের মধ্যে থাকবে সেজন্য গণভোট আগে হতে হবে।’

একমাসও সময় নেই এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গণভোটের আয়োজন করতে পারবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সনদের বিষয়গুলো ইলেকশন কমিশন ওয়েবসাইটে দেবে, জাতিকে জানাবে। সরকার যদি ইলেকশন কমিশনকে বলে তাহলে তাদের পক্ষে গণভোটের আয়োজন করা সম্ভব।’

আপনারা যে আটটি দল এক টেবিলে বসলেন এই দলগুলো আগামী নির্বাচনে এক হয়ে অংশ নেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সময়ের দাবিতে আমরা যুগপৎভাবে এই কর্মসূচি আজকে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করছি মাত্র। তারপরে নির্বাচন, নির্বাচনের তফসিল, পোলারাইজেশন, মেরুকরণ এগুলো আরও সময় না আসলে বলা যাবে না। তবে আমরা সংস্কার প্রশ্নে অনেকগুলো দাবিতে একমত হওয়ার কারণে একসঙ্গে চলছি। এটা কোনো নির্বাচনী জোট নয়, সে জাতীয় কোনো জোট এখনো হয়নি।’

আপনারা শুরু থেকে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর দাবি করে আসছিলেন। এখন কি সে দাবি থেকে সরে আসলেন? এখন কি যে কোনো এক কক্ষে পিআর চাচ্ছেন? জবাবে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা কয়েকটি দল উচ্চ কক্ষে পিআর চাই। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন দুই কক্ষেই পিআর চায়। আমরা যার যার অবস্থানে ঠিক আছি।’

এভাবে আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ায় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে কি না ? জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘না নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্যই আমাদের এই আন্দোলন। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আমরা নির্বাচন চাই। সংস্কারতো প্রায় হয়েই গেছে। শুধু আদেশ জারি ও গণভোট করতে হবে। এরকম অবস্থায় আমরা মনে করছি আন্দোলন ছাড়া যারা কর্তৃপক্ষ সরকার প্রধান এবং যারা ঐকমত্য কমিশনের প্রধান তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আশা করি আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সমাধান হবে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে না।’

আর টিভির দুই সংবাদ কর্মীর চাকুরিচ্যুতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘যেকোনো গণমাধ্যমের কর্মীদের চাকুরিচ্যুতির তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদেরকে অবিলম্বে স্ব স্ব চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি করছি।’

বিমানবন্দরের কারগো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পাচ্ছি। অবিলম্বে তদন্ত করে এটার পেছনে উদ্দেশ্যমূলক কোনো নাশকতার চক্রান্ত আছে কি না সেটা সরকারকে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান , খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর