চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হাত-পায়ের রগ কাটা অবস্থায় এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তাকে খুন করা হয়েছে না কি তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেছেন সেটা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।
নগরীর বন্দর থানার আনন্দবাজার এলাকায় আউটার রিং রোড সংলগ্ন সানসেট পয়েন্ট বীচ অ্যান্ড রিসোর্টের দক্ষিণে কাশবনের ভেতর থেকে তার লাশ রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উদ্ধার করা হয়েছে। গভীর রাত আনুমানিক ২টার দিকে পরিবারের লোকজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করে।
মৃত শামীম মাকসুদ খান জয় (২৬) ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি–বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
বরিশাল জেলায় বাড়ি হলেও নগরীর বন্দর আবাসিকের বড়পোল এলাকায় শামীম তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা বসবাস করেন বলে পুলিশ জানায়।
বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল করিম সারাবাংলাকে জানান, রোববার বিকেল ৩টার দিকে সাগরতীরে কাশবনের ভেতরে হাত-পায়ে রগ কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন শামীম। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় কয়েকজন দেখতে পেয়ে আউটার রিং রোড টহলরত পুলিশ সদস্যদের খবর দেন। তথ্য পেয়ে হালিশহর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে শামীমকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
‘হালিশহর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল তাদের এলাকায় ভেবে লাশ উদ্ধার করেছিল। কিন্তু প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর তারা রাত ২টার দিকে আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। তখন শামীমের পরিবারের সদস্যরাও হাসপাতালে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।’
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে এসআই মনিরুল বলেন, ‘দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় যখন কাশবনের ভেতরে পড়ে ছিল, সেখানে একজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, রক্তাক্ত অবস্থায় শামীম যখন কাতরাচ্ছিলেন, তখন তিনি গিয়ে কারা তাকে আহত করেছে জানতে চেয়েছিলেন। শামীম তাকে জানিয়েছেন, সে নিজেই হাত-পায়ের রগ কেটেছে। এখন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে হবে।’
শামীম আত্মহত্যা করেছেন অথবা তাকে খুন করা হয়েছে – এমন দুই ধরনের ধারণা নিয়েই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার বেলা ১২টার দিকে শামীম বাসা থেকে বের হন। বের হওয়ার আগে তার মোবাইলে একটি কল এসেছিল এবং শামীম তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন তার মাকে। বের হওয়ার সময় চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাবার কথাও তার মাকে জানিয়েছিলেন।