রংপুর: পীরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের সন্দেহজনক ছয় রোগী শনাক্ত হয়েছে। অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস বিতরণের পর তাদের শরীরে ঘা দেখা দেয়।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে রোববার (১৯ অক্টোবর) অপরজনের নমুনা নেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, আক্রান্ত সব রোগীর বাড়ি উপজেলার দাঁড়িয়াপুর গ্রামে। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা নিয়ে হাসপাতালে আসেন।
আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় টুটুল মিয়ার একটি গাভী অসুস্থ হলে ১১ অক্টোবর জবাই করে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। মাংস কাটাকাটির সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের শরীরে পরের দিন থেকে ঘা দেখা দেয়।
স্থানীয় নারী শান্তি বেগম বলেন, ‘ভাইয়ের অসুস্থ গরু জবাই করার পর ৮/৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাননি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০ অক্টোবর পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭ এবং পীরগঞ্জে ১ জনসহ মোট ৭৬ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জের নতুন পাঁচ রোগীর তথ্য এখনো এই তালিকায় যুক্ত হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা বলেন, ‘জেলায় নিশ্চিত অ্যানথ্রাক্স রোগী ১১ জন। কিন্তু, সন্দেহজনক রোগী বেশি। এর কারণ, নমুনা সংগ্রহের জন্য শরীরে কাঁচা ঘা থাকতে হয়, ঘা শুকিয়ে গেলে নমুনা নেওয়া যায় না। অনেক রোগী চিকিৎসা শুরু করলে ঘা শুকিয়ে যায়।’
উল্লেখ্য, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সে দুইজন মারা যান। পরে পাশের জেলা গাইবান্ধায়ও রোগী পাওয়া যায়। ৪ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রোজিনা বেগম (৪৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।