ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. জুবায়েদ হোসেন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ও চার্জশিটের রহস্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদদীন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ শোকে বিহ্বল। আমাদের সামাজিক জীবন ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস যেখানে পালন করতে চেয়েছি সেখানে জোবায়েদের শোকসভা করতে হয়েছে। আজকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সবাই বসেছিলাম। সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম বাদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস জোবায়েদকে উৎসর্গ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হত্যার আসামি হিসেবে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোর্টে হাজির করে ১৬৪ তে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার তিনদিনের মাথায় এই অগ্রগতি পেয়েছি। গ্রাম থেকে এসে জোবায়েদের পরিবারেরকে আইনি ঝামেলা মেটাতে কষ্ট হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
মামলার এজাহারের দুর্বলতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্ষার বিষয়ে মামলার এজাহারে একটা কথা ছাড়া অন্য কোনো কথা উল্লেখ নাই। অথচ বর্ষা তো ডেকে নিয়ে জোবায়েদ খুন করেছে। সেই তো খুনীদের সব লোকেশন দিয়েছে। আমার প্রশ্ন এজাহারের এগুলো আসলো না কেনো? এ ছাড়া পুলিশ প্রশাসন নিশ্চিত কিভাবে করবেন যে সিসিটিভি ফুটেজের যে দুইজনকে দেখা গিয়েছে, যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা সেই নাকি এর পেছনে অন্য রহস্য আছে। পুলিশ বলছে ধস্তাধস্তি হয়েছে। ধস্তাধস্তি হলে তো শোরগোল হওয়ার কথা। এ শব্দ কি বাসার কেউ শুনেনি? পুলিশের কাছে প্রশ্ন ওই বাসার সবার সঙ্গে জিজ্ঞেস বাদ করা হয়েছে কিনা।’
রইছ উদ্দিন প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘পুলিশ ত্রিভুজ প্রেমের যে গল্পের কথা বলছে, বর্ষা বাবা-মা প্রেমের কথা জানার কথা। পুলিশ বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করেছিল কিনা। এটাও আমাদের জানতে হবে যদি জেনে থাকে তাহলে বর্ষার বাবা মাও তো জড়িত। না হলে তে টিউশন থেকে জোবায়েদকে তার বাবা মা বের করে দিতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাহির যদি হত্যা করতো তাহলে সে জোবায়েদের চাইতে ছোট, কিভাবে এক চুরির এক পোজে তাকে হত্যা করে? এবং এখানে ত্রিভুজ প্রেমের কল্পনা সাজানো হয়েছে জোবায়েদ এমন ছেলে নয়। জোবায়েদের চরিত্র হরণ করার চেষ্টা যেন না করা হয়। আমার সবাই জোবায়েদের পক্ষে সাক্ষ্য দিব। বর্ষা জোবায়েদকে পছন্দ করে সেটা বর্ষার ব্যাপার। তার বাবা মা জানলে তাকে টিউশন থেকে ছেড়ে দিতো।’
প্রশ্ন উত্থাপন শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক। নিরাপরাধ কেউ শাস্তি না পাক। আইনের ফাঁকে যেন কেউ বেরিয়ে না যায়। সবসময় আমরা চাই অপরাধীরা শাস্তি পাক। সুষ্ঠু বিচার হলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না।’